শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারো নেত্রকোণার প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে পানি ডুকে প্লাবিত হয়েছে ৬৫টি গ্রাম।
জেলার প্রধান নদ-নদী কংশ, সোমেশ্বরী, মগড়া ও ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপৎসীমা ছাড়ায়নি। গ্রামীণ রাস্তা, পুকুর, ঘরবাড়ি ও বিদ্যালয় প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যেতে পারে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দায় মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাশাপাশি পূর্বধলা উপজেলার কংশ নদীর জারিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার, খালিয়াজুড়ি উপজেলার ধনু নদীর পানি ২৬ সেন্টিমিটার এবং দূর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর পানি দূর্গাপুর পয়েন্টে ১.৪৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার ধনু, কংশ, সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছেন, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান। এ ছাড়া জেলার প্রধান সবকটি নদীর পানিই বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছেন পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।
তিনি আরো বলেন, সব নদীর পানিই বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে বইছে। আমরা সাধারণত বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার থেকে ১ মিটার ওপর পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হলে বন্যা পরিস্থিতি হিসেবে গণ্য করি। বিপৎসীমার এক মিটারের ওপরে পানি প্রবাহিত হলে অতি বন্যা গণ্য করে থাকি। সে হিসেবে কলমাকান্দায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, তবে বন্যা পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। উপজেলার হাওর বেষ্টিত কলমাকান্দা সদর, বড়খাপন ও পোগলা ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রাম জলাবদ্ধ রয়েছে। উপজেলায় মোট ৬৫টি গ্রাম জলাবদ্ধ অবস্থায় আছে। এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে সরানোর মত অবস্থা তৈরি হয়নি। তবে আমাদের ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে এখানে বন্যার একটা সম্পর্ক রয়েছে। ওখানে ভারী বৃষ্টি হলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি বন্যা মোকাবিলা করার জন্য।
জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখন পর্যন্ত জেলায় বসত বাড়িতে পানি ঢুকেনি। তবে পানি বৃদ্ধিতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বন্যা মোকাবিলার জন্য সব প্রস্তুতি জেলা প্রশাসনের রয়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)