রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সিরাজগঞ্জের দুইটি পয়েন্টেই কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। এতে জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও যমুনার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি কমলেও এখনো জেলার ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া চলতি বন্যায় পানিতে ডুবে সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ৭ জুলাই থেকে সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কিছুটা কমতে শুরু করলে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া বন্যা কবলিত মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু গত ১০ জুলাই আবারও যমুনা নদীর পানি বাড়ায় বিপাকে পড়ে এসব এলাকার মানুষ। তবে, দুদিন যমুনা নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধির পরে আবারও কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে কমছে অভ্যন্তরীণ হুরা সাগর, কাটাখালী, ফুলজোড় ও ইছামতী নদীর পানিও।
এছাড়া চলতি বন্যায় নৌকা ও পানিতে ডুবে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর মহল্লার আব্দুল হামিদের ছেলে মারুফ হোসেন (১৮)। তিনি শাহজাদপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। একই মহল্লার শাহ আলমের ছেলে সজল হোসেন (১৮), তৌহিদের ছেলে তন্ময় শেখ (২০)। তারা নৌকা ভ্রমণে গিয়ে নৌকাডুবে মারা যায়। এছাড়া চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ইটাইল গ্রামের বায়জিদের ছেলে কাউছার (৩), একই উপজেলার খাষপুকুরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কোদালিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মাহিম হোসেন (৫), সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদ নগর ব্যাপারী পাড়ার আলী হোসেনের ছেলে সবুজ কানন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্র রোমান হোসেন (১৪) ছাড়াও কাজিপুরের চরাঞ্চলের এক শিশুসহ আরেকজন রয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ১২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যমুনায় আগামী তিন-চারদিন পানি কমার পরে আবারও বাড়বে। তখনও কয়েকদিন পানি কিছুটা বেড়ে আবার কমবে। এভাবেই চলতে থাকবে। তবে এখন পর্যন্ত চলতি বছরে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। পাশাপাশি ভাঙ্গণ রোধেও কাজ চলমান রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, জেলার ২৩ হাজার ৮শ পরিবারের এক লাখ ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যেই বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় চলতি বন্যায় এখন পর্যন্ত নৌকা ডুবে চারজন ও পানিতে ডুবে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)