বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির মৃত্যুর ঘটনায় ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন গেটে অবস্থানরত অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘আমরা সবাই রাচির ভাই, রাচি হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাইরে?’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আট দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন। সেগুলো হলো- নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা; ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কাঠামোগত হত্যার যথাযথ বিচার করা; পর্যাপ্ত সড়কবাতি, ফুটপাত ও গতিরোধক স্থাপন করা এবং যানবাহনের গতি পরিমাপ রাখা; নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া; মেডিকেল সেন্টারের জরুরি সেবার মানোন্নয়ন করা; নিবন্ধনহীন সব যানবাহন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা এবং নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা; সব রিকশাচালকের প্রশিক্ষণ থাকা সাপেক্ষে নিবন্ধন দেওয়া; অদক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের প্রত্যাহার করা এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করা। তাদের এই কর্মসূচি চলাকালে ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হবে না।
ব্লকেড কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দুর্বার আদি বলেন, প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল ক্যাম্পাসের মেডিকেলে উপযুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। একজন শিক্ষার্থী যদি ক্যাম্পাসে আহত হন, তাকে ক্যাম্পাসের মেডিকেলে নেওয়ার পর তার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা। আফসানার ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। এটিকে প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখতে হবে। ক্যাম্পাসে শুধু রিকশা নয়, মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণেও কোনো পদক্ষেপ নেই। এ জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছি।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে আফসানার নিহত হওয়ার পর ক্যাম্পাসের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সড়ক উন্নয়ন, সার্বিক নিরাপত্তাসহ আট দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো পূরণের অগ্রগতি না দেখা গেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)