শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ডিএমপির আলোচিত ওসি মোহাম্মদ মহসীন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে বেশ পরিচিত। তার আইনি পরামর্শের ভিডিও অনেকে দেখে থাকেন। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও থানায় কর্মরত এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নামে ফেসবুক আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপে চলে প্রতারণা। বিষয়টি জানার ওপর ওসি মহসীন জিডি করেন। তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। এতে বেরিয়ে আসে গাইবান্ধার আনোয়ার হোসেন (৩০) নামে এক যুবক ওসি মহসীনের নামে আইডি খুলে ৭৭১ জন নারীর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করেছেন। অবশেষে সেই আনোয়ারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা জানা এই আনোয়ার শুধু ওসি মহসীনের নামেই নয়, ফেসবুক ও হোয়াটস্অ্যাপে পুলিশ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রীসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করেছেন। এই সংখ্যাটি কয়েকশ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা।
এর আগে গাইবান্ধা সদর থানার স্টেশন রোডের দাশ বেকারি মোড়ের ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে আনোয়ারকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতার আনোয়ারের বাড়ি গাইবান্ধার জেলার সদর থানার স্টেশন রোড এলাকায়। তিনি পেশায় একজন প্রিন্টিং প্রেসের কর্মচারী। তবে এলাকায় বিভিন্নজনের ফেসবুকীয় সমস্যার সমাধান করে দেওয়ায় ‘মাস্টার’ নামে সবাই তাকে চিনে থাকে। আইটির এই যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে আনোয়ার প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েন।
যুগ্ম কমিশনার লিটন কুমার বলেন, আনোয়ারকে গ্রেফতারের পর তার কম্পিউটার ও মোবাইলে রাষ্ট্রপতি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান, তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন, চিত্রনায়ক শান্ত খান, অভিনেতা ও মডেল আব্দুন নুর সজল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামের ফেসবুকের আইডি পাওয়া যায়। এর মধ্যে কয়েকটি আইডি ডিজঅ্যাবল থাকলেও বাকিগুলো সচল অবস্থায় পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিটন জানান, আনোয়ার বেশি মেয়েদের সঙ্গে চ্যাটিং করতেন। কখনো ওসি সেজে, কখনো নায়ক সেজে, কখনো বা জনপ্রতিনিধি সেজে চলত তার এমন চ্যাটিং। আনোয়ার যাদের সাথে প্রতারণা করেছেন তাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী, মডেল। আনোয়ার ম্যাসেঞ্জারে কথা বলার পরে হোয়াটসঅ্যাপেও তাদের সাথে কথা বলতেন। কেউ তাকে নিয়ে সন্দেহ পোষণ করলে তাকে ব্লক দিতেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)