শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
গ্রামীণ ব্যাংক নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. ইউনূসের আটটি প্রতিষ্ঠান দখল করেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান একেএম সাইফুল মজিদ। তিনি বলেন, আইন মেনে গ্রামীণ টেলিকম ভবনের সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো মালিকানা বা শেয়ার নেই।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, তাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান তিনি ব্যবসার মুনাফা দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ড. ইউনূসের অভিযোগের জবাব দিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল মজিদ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম সভায় কোম্পানি আইনের আলোকে ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ গঠিত হয়। আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনের ৪৮ নম্বর ধারায় বলা আছে- গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিতে পারবে। গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৪৪৭ কোটি টাকা নিয়েছেন। গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েও ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২৪ কোটি টাকা অনুদান নিয়েছেন। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম এ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে সুদ ও লভ্যাংশ বাবদ কোনো টাকা দেয়নি।
ড. ইউনূস মানি লন্ডারিং করেছেন, যার প্রমাণ হাতে রয়েছে উল্লেখ করে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ড- এসব প্রতিষ্ঠান গড়তে গিয়ে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা সরিয়েছেন। গত সাত মাস ধরে নিরীক্ষা করে তারা এসব তথ্য পেয়েছেন। ড. ইউনূস ব্যবসার মুনাফা দিয়ে গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণসহ অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান করেননি। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
তিনি বলেন, সাতটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে নিতে তারা চিঠি দিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী ও গ্রামীণ শক্তি- এই সাতটি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যান ও পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ড. ইউনূস আটটি প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছেন। এ তথ্যটি সঠিক নয়। এসব প্রতিষ্ঠানে ড. ইউনূসের কোনো মালিকানা ও শেয়ার নেই।
তিনি আরও বলেন, গত সোমবার গ্রামীণ ব্যাংকের ১৫৫তম বোর্ডসভায় সাতটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ গ্রামীণ ব্যাংকের সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর আইন মেনে করা হয়েছে। এখানে কোনো বেআইনি বা নিয়ম বহির্ভূত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সাইফুল মজিদ বলেন, বর্তমানে ১ কোটি ৫ লাখ দরিদ্র ভূমিহীন ঋণগ্রহীতা গ্রামীণ ব্যাংক তথা গ্রামীণ পরিবারের সদস্য। তাদের উন্নয়নই গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের মতো একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে যে কোনো সমালোচনা দুঃখজনক।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)