সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার (২২ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে নিয়ন্ত্রণে এসেছে রাজধানীর ডেমরায় কাপড়ের গোডাউনে লাগা আগুন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় ডেমরার ভাঙ্গাপ্রেস এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার খবর জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।
তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট। পরে এ কাজে যোগ দেয় পুলিশ ও নৌবাহিনী। কাছাকাছি পানি না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদরদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, ডেমরার ভাঙ্গাপ্রেস এলাকায় চারতলা ভবনটির তিনতলায় কাপড়ের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত। পরে চার তলাসহ অন্যান্য ফ্লোরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে একে একে ডেমরা, পোস্তগোলা ও সিদ্দিকবাজার ফায়ার সার্ভিসসহ আরও ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে আগুনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ইনসিডেন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম বলেন, কোনো ধরনের নীতিমালা না মেনে নির্মাণ করা হয়েছে ডেমরার ভাঙ্গা প্রেস এলাকায় ভয়াবহ আগুন লাগা ভবনটি। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস দেখতে পেয়েছে, ভবনটিতে নেই ফায়ার এক্সিট, ভেতরে ঢোকার সিঁড়িও খুবই সংকীর্ণ। পাশের অন্য ভবন থেকে পানি দেওয়ার সুব্যবস্থাও নেই, কারণ ভবনগুলো সব লাগোয়া। শুধু তাই নয় ভবনটির নিচে নেই নিজস্ব কোনো ওয়াটার রিজার্ভ।
তিনি বলেন, এখানকার ভবনগুলো পাশাপাশি, ঘন ঘন ও লাগোয়াভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। যেটি এখন জ্বলছে তার ঠিক পূর্ব পাশের ভবনটিও লাগোয়া। একই দেয়াল, এক ইঞ্চিও ফাঁকা নাই। যে কারণে আমরা ভবনটির পূর্ব পাশ দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি দেওয়াসহ কোনো কাজই করতে পারতেছি না।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনের ঢোকার সিঁড়ি খুবই সংকীর্ণ। সঙ্গে মালামাল দিয়ে স্তূপ করে সাজানো। উঠানামার জন্য জায়গাটি মোটেও পর্যাপ্ত নয়। পর্যাপ্ত এক্সিট রুট নাই, বিকল্প কোনো সিঁড়ি নেই, বিকল্প এক্সিট রুটও রাখা হয়নি।
মো. রেজাউল করিম জানান, ভবনটির নিচে যে ওয়াটার রিজার্ভ থাকার কথা ছিল সেটি আমরা পাইনি। শুধু তাই নয়, এই আগুন লাগা ভবনের আশপাশে যেসব ভবন রয়েছে সেখানেও আমরা পানির রিজার্ভ পাইনি। এইসব ব্যত্যয়ের কারণে আমাদের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
এ কর্মকর্তা বলেন, ভবনটি ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। আমরা ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করেছি, দেখেছি। ভবনের যে অবকাঠামোগত স্ট্রেন্থ সেটা আর নেই। একেবারে কমে গেছে। ভবনটির এক জায়গায় ছাদ ফেটে গেছে। যে কারণে যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাঠামোগত শক্তি একেবারেই হারিয়েছে ভবনটি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)