সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
রাজধানীর পল্লবীতে ফয়সাল নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জড়িতরা ঘটনার সময় দুজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এর মধ্যে ফয়সাল পরে হাসপাতালে মারা যান এবং রাশেদ নামে আরেকজন গুরুতর আহত হন। এই কোপানে মিশন শেষে অংশগ্রহণকারীরা আনন্দে ওই রাতেই পার্টির আয়োজন করে। পরে মৃত্যুর খবরে তারা ঢাকা ছাড়ে।
এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণও বেরিয়ে এসেছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা বলছেন, মাদক কেনাবেচা, লেনদেন ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্ব ছিল তাদের মধ্যে। ‘পেপার সানী’ ও ‘গালকাটা রাব্বি’ গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে প্রকাশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এ ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন আকাশ ওরফে টান আকাশ (২২), ফজলে রাব্বি ওরফে হিটার রাব্বি ওরফে গালকাটা রাব্বি (২০), মো. ইমরান (২৫), মো. রাসেল কাজী (২৪) ও নয়ন (২৫)। শুক্রবার নরসিংদী ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মো. আকাশ ওরফে টান আকাশ ও ফজলে রাব্বি ওরফে হিটার রাব্বি ওরফে গালকাটা রাব্বি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানান, চলমান এই বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের দুজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের পর পার্টি উদযাপন করেন একটি গ্রুপের সদস্যরা। পার্টি শেষে যখন শুনতে পান আহতদের মধ্যে ফয়সাল মারা গেছেন, তখনই দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যান তারা। এই হত্যার ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রেফতার এড়াতে তারা প্রথমে নেত্রকোনায় আত্মগোপনে গিয়ে দুই দিন সেখানে অবস্থান করেন। পরে মুন্সিগঞ্জ ও গাজীপুর এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, পল্লবী এলাকায় ৪-৫ মাস আগে মাদক কেনাবেচা নিয়ে ভাগাভাগি, সিনিয়র-জুনিয়র, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের কোন্দল ঘিরে রাব্বি ও সানি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এরপর থেকেই দুই গ্রুপের মধ্যে প্রায়ই মারামারি হতো। ঘটনার প্রায় এক মাস আগেও পেপার সানী গ্রুপের সদস্যরা গালকাটা রাব্বিকে মারধর করে। তার পায়ের রগ কেটে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পল্লবীর সেই কিশোর গ্যাং রাব্বীর গ্রুপে ১৪-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই আগে পেপার সানী গ্রুপের সদস্য ছিল। পরে তারা সেই গ্রুপ থেকে বের হয়ে নতুন গ্রুপে যোগ দেয়। এখন পর্যন্ত তাদের ইন্ধনদাতা বা মদতদাতার তথ্য পাওয়া যায়নি। পেপার সানী গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, রাব্বির বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, মারামারি ও মাদকের চারটি মামলা রয়েছে এবং ইতঃপূর্বে একাধিক বার কারাভোগ করেছেন। আকাশের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে, তিনিও একাধিকবার কারাভোগ করেছেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)