শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষে সাইন্সল্যাব ছেড়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া অবরোধ বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে তুলে নেন তারা। তবে রাতের মধ্যে কোটা বাতিলের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসলে আবারও এমন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আপিল বিভাগের আদেশ প্রত্যাখ্যান করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা জোর নিবেদন জানাই, যেন নির্বাহী আদেশে এটি বাতিল করা হয়।
আপনারা অনতিবিলম্বে ছাত্র সমাজের এক দফা দাবি মেনে নিন। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরতে চাই। আমাদের পড়ার টেবিলে ফেরার সুযোগ দিন। আমরা গত তিনদিন ধরে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি দিয়ে সারা দেশ অচল করে দিয়েছি। তাই বলতে চাই আমাদের দাবি মেনে নিন। আর যদি আমাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির দিতে বাধ্য হবো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এর মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলবে।
তিনি বলেন, আমরা ছাত্র সমাজ আপিল বিভাগ থেকে যে রায় দিয়েছে সেই রায়কে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা বলতে চাই ছাত্র সমাজের প্রাণের এক দফা দাবি হচ্ছে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, সবকটি জায়গায় বেসামরিক অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে। সংবিধানের প্রতি আমরা সম্মান রেখে বলছি, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে যৌক্তিকভাবে কোটা রেখে সংসদে আইন পাশ করতে হবে। যতদিন না পর্যন্ত ছাত্র সমাজের এক দফা দাবি আদায় হবে, আমরা রাজপথ থেকে ফিরে যাবো না।
এদিকে আজ বুধবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
পরে গত ৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করেছিলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)