রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দেশের চামড়া শিল্পে জড়িত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আকরাম খান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) নেত্রী শামীম আরা, যুগ্ম সমন্বয়ক নইমুল আহসান জুয়েল শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে মালিকদের অসহযোগিতার প্রতিবাদ জানানো হয় ও শিক্ষানবিশকাল ৬ মাস করা, একই সঙ্গে এসব শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া গ্রেড-১ ভুক্ত শ্রমিকদের বেতন ৪৩ হাজার ৪৪২ টাকা, গ্রেড-২ ভুক্ত শ্রমিকদের বেতন ৩৭ হাজার ৭৬১ টাকা, গ্রেড-৩ ভুক্ত শ্রমিকদের বেতন ৩২ হাজার ৮৬২ টাকা ও গ্রেড-৪ ভুক্ত শ্রমিকদের বেতন ২৮ হাজার ৬৪০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
মজুরি বোর্ড ও মালিকপক্ষ আইন ভঙ্গ করছে ও নতুন মজুরি ঘোষণায় গড়িমসি করছে উল্লেখ করে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, নতুন মজুরি নির্ধারণে ২০২৩ সালে একটি ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন করে।
মজুরী বোর্ডটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট। আগামী ২২ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ সভাটিতে এই মজুরি বোর্ডের সময়কাল হবে ১১ মাস ৫ দিন। তবে বাংলাদেশ শ্রম আইন-এর মজুরি সংক্রান্ত একাদশ অধ্যায় এর ধারা ১৩৯ উপধারা ২ মোতাবেক ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ বোর্ড গঠন হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করার কথা এবং অন্যান্য শিল্পখাত এর জন্যও এরইমধ্যে আমরা সাধারণত এই সময়কাল অনুসরণ করতে দেখেছি।
মালিকদের মজুরি হার প্রস্তাবনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, চতুর্থ সভা পর্যন্ত মালিক পক্ষ মজুরি প্রস্তাব করেনি। সম্প্রতি পঞ্চম সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৩ জুন। ওই সভায় মালিকপক্ষ অনেকটা দায়সারা একটি লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করে যা প্রকৃতপক্ষে বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ন্যূনতম মজুরির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে তিনি বলেন, শিল্পখাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয় সাধারণত পরবর্তী সময়ে ৫ বছরের জন্য, ঘোষণা পরবর্তী প্রতিবছর ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট-এর শর্তসহ। ২০১৮ সালে ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি অনুযায়ী হেমায়েতপুর এলাকায় কর্মরত শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য মজুরি ছিল ১৩,৫০০টাকা যা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট যোগ হয়ে ২০২৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১৭,৫৪৮ টাকা। নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার জন্য এ পরিমাণের নিচে যেকোনো ধরনের আলোচনাই আইনের পরিপন্থি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মালিকপক্ষ কোনো প্রকার বিশ্লেষণ বা ধারণা ছাড়াই পঞ্চম মজুরি বোর্ড সভায় যে প্ৰস্তাবনা পেশ করেছে তা ১৭,৫৪৮ টাকা থেকে অনেক কম। ফলাফল স্বরুপ, মজুরি বোর্ড অনেকটা বাধ্য হয়েই মালিকপক্ষকে পরবর্তী বোর্ড সভা পর্যন্ত আবারও সময় দিয়েছে তাদের প্রস্তাবনা পেশ করার জন্য।
প্রস্তাবের পক্ষে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সংগঠনটি। ওই গবেষণায় ৫২ জন শ্রমিক ও তাদের পরিবারের তথ্য নেওয়া হয়েছে।
যেখানে বলা হয়, হেমায়েতপুর এলাকায় ৪ জনের একটি পরিবারের খাবার খরচ ১৯ হাজার ৫৯০ টাকা, মাসিক বাড়ি ভাড়া ৭ হাজার ৫৯৩ টাকা, চিকিৎসা ব্যয় ১ হাজার ৮৫৩ টাকা, শিক্ষা বাবদ খরচ ২ হাজার ৩৩৫ টাকা, অন্যান্য খরচ ৭ হাজার ২৩২ টাকা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)