বৃহঃস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১


উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

আগ্রাসনবিরোধী প্রতিটি লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা শহীদ আবরার ফাহাদ

কুষ্টিয়া থেকে

প্রকাশিত:৬ মার্চ ২০২৫, ১৬:২৭

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকার আবরার ফাহাদের স্মৃতি মুছে দিতে চেয়েছিল। তারা আবরার ফাহাদকে নিয়ে নিউজ করতে দিত না, কোনো কর্মসূচি পালন করতে দিত না। কর্মসূচি পালন করতে গেলে হামলা করা হতো, জেল-জুলুমের শিকার হতে হতো। যারা আত্মত্যাগ করে তাদের নাম কখনো মুছে দেয়া যায় না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আবরার ফাহাদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। আগ্রাসনবিরোধী প্রতিটি লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা শহীদ আবরার ফাহাদ। পরাজিত শক্তি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। এধরণের প্রচেষ্টাকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ এসব কথা বলেছেন।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আবরার ফাহাদ ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে ২০১৯ সালে বুয়েটের ছাত্রলীগের নির্যাতনে শহীদ হন। আবরার ফাহাদ শাহাদাতের পর সেদিন সকালে যখন আমাদের কাছে খবরটা পৌঁছয়। তখন থমথমে পরিবেশ, কিছু করলেই ছাত্রলীগের হামলা, পুলিশ গ্রেপ্তার করতো। তখন আমরা কোনো কিছু না ভেবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করি। সেদিন প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে সবাই ভিজে মিছিলে অংশগ্রহণ করে। তারপর খুনিদের বিচারের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকে।

তিনি বলেন, আগ্রাসন বিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ে আবরার ফাহাদ অন্যতম নতুন ধাপ সংযোজন করে গেছেন। আবরার ফাহাদকে সামনে রেখে আমরা সেই লড়াইকে চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিবছর ৭ অক্টোবর দিনটিকে স্মরণ করতে চেয়েছি। আবরার ফাহাদ স্মরণে পলাশীতে স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করার কয়েক ঘণ্টা পর ফ্যাসিস্ট হাসিনার পুলিশ সেটি ভেঙে দিয়েছিল। আমরা সেটা পুনরায় নির্মাণ করেছি। আবরার ফাহাদের তৃতীয় শাহাদাত বার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মরণ সভার আয়োজন করেছিলাম। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করে এবং আহত অবস্থায় আমিসহ আমার ২৪ জন সহযোদ্ধাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। এতে দীর্ঘদিন আমরা জেলে ছিলাম।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আবরার ফাহাদ শুধু একটি নাম না। আগ্রাসনবাদের বিরুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ। আবরার ফাহাদ আমাদের আগ্রাসনবিরোধী লড়াইয়ের একটা জার্নি। সেই জার্নির অন্যতম অর্জন জুলাই গণঅভ্যুত্থান। গণঅভ্যুত্থানে এদেশের এদেশের তরুণরা জীবন দিতে প্রেরণা পেয়েছে আবরার ফাহাদের থেকে। আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এদেশের তরুণরা ঝাঁকে ঝাঁকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাজপথে। অবশেষে আগ্রাসী অপশক্তির সবচেয়ে বড় খুঁটি শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমাদের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ ও আগ্রাসনবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদেরকে যেন আমরা সবাই আজন্ম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখি। সেজন্য কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম। এছাড়াও সারাদেশে সরকারি স্থাপনা আত্মত্যাগকারী শহীদ বীরদের নামে নামকরণ করা হবে।

তিনি বলেন, সংস্কৃতির রাজধানী কুষ্টিয়া। সারা দেশে লালন ভূমি হিসেবে পরিচিত। সবাই মিলে খেলাধুলাকে প্রোমোট করবেন। এই স্টেডিয়াম যেন সব সময় খেলাধুলায় মেতে থাকে। এখান থেকে যেন জাতীয় পর্যায়ের ভালো ভালো খেলোয়াড় পাই সেই প্রত্যাশা থাকবে। বেকারত্ব মাদক নিরসনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তরুণ সমাজকে মাদকমুক্ত করার জন্য অন্যতম উপায় খেলাধুলা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকিসুদ জাহেদী, যুগ্ম সচিব আমিনুল রহমান, আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে কুষ্টিয়ার এই স্টেডিয়ামের নাম ছিল শেখ কামাল স্টেডিয়াম। ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি এটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বরে স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম নামকরণ করা হয়।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৫:০১ ভোর
যোহর ১২:১০ দুপুর
আছর ০৪:২৫ বিকেল
মাগরিব ০৬:০৪ সন্ধ্যা
এশা ০৭:১৯ রাত

বৃহঃস্পতিবার ৬ মার্চ ২০২৫