সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১
ছবি সংগৃহীত
মাগুরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র-জনতা। রোববার (৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ছাত্র-জনতা এ বিক্ষোভ করেন।
আদালতের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীরা ধর্ষণে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিদ্যমান আইনে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায় বলে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন তারা। সেই সঙ্গে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী যেন আদালতে না দাঁড়ান সেই দাবিও জানিয়েছেন তারা। তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে মার্চ টু মাগুরা কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি করেন তারা।
দুপুর ১টার পর ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর একটি দল। পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের আশ্বাস পেয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে বিক্ষোভকারীরা আদালতের ফটক থেকে সরে যান।
এদিকে গতকাল শনিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন।
এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (মেয়ের শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাসুরও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালান তারা। মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪)–এর ক/৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগ করা হয়। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের গতকাল বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণের এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
রোববার (৯ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে শিশুটির সব ছবি পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল ও সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ধর্ষণের শিকার শিশু ও তার ১৪ বছরের বোনকে দেখভালের জন্য সমাজসেবা অফিসার নিয়োগ এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শায়ের হাসান টগর বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ধর্ষকদের পক্ষে মাগুরার কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবেন না। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়ার জন্য আমরা সহযোগিতা করব।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)