বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহিত
দশ থেকে পনেরো সেন্টিমিটার কমে এবং বাড়ে, টানা দশদিন ধরে এমন পরিস্থিতির পর আবারও তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষজন আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২২ মিটার যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধির এ হার বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। আগামী ২/৩ দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্ধুর্ণা, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে এসব এলাকার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বহু কাঁচা-পাকা সড়কে পানি উঠে পড়ায়।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা ক্রমে কমে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটে। কিন্তু এক সপ্তাহে না যেতেই ফের উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তার পানি আবার বাড়ছে।
এছাড়া তিস্তা-ধরলার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। অনেক মৎস্য খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ রায় বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ মঙ্গলবার রাত থেকে আবারও বেড়েছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, দুই থেকে তিনদিনের মাথায় পানির প্রবাহ কমে যেতে পারে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)