সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ছবি : সংগৃহীত
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি ভোক্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ভেজাল, নিম্নমান বা নকল তেল মিশ্রণের প্রবণতা বাড়ে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ক্যাব রাজশাহীর উদ্যোগে আয়োজিত বিভাগীয় খাদ্য সমৃদ্ধকরণ ও ভোক্তা অধিকার শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্যাবের সভাপতি এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, বাজারে খাদ্যপণ্যের মান নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিদফতর, বিএসটিআই, কৃষি বিভাগ, ওষুধ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে দিলে হবে না, জনগণের সংগঠন হিসেবে ক্যাবকেও সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে। খোলা তেল বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা মাঠপর্যায়ে মনিটরিং, প্রচারণা ও জনসচেতনতার কর্মসূচি বাড়াব। খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি ভোক্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে ভেজাল, নিম্নমান বা নকল তেল মিশ্রণের প্রবণতা বাড়ে। তাই ভোক্তা পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও নিয়ম মেনে প্যাকেটজাত তেল বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলে আলুর বাজারে বিশৃঙ্খলা, ভেজাল বীজ, সার সিন্ডিকেট, পরিবহনে চাঁদাবাজি—এসব সমস্যা দীর্ঘদিনের। ক্যাব সদস্যরা শুধু পরিচয় দিয়ে ডিসির সঙ্গে বৈঠক করলে হবে না, মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হতে হবে। কৃষিঋণ প্রকৃত কৃষকের হাতে পৌঁছায় কি না সেটি তদন্ত করা জরুরি। রাজশাহীতে একটি নির্দিষ্ট সিন্ডিকেট ঋণ বিতরণ নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে প্রকৃত কৃষক ঋণ পাচ্ছেন না বরং উঁচু সুদে দাদন নিয়ে চাষাবাদ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিতিশীলতার কারণ তুলে ধরে ক্যাবের সভাপতি সফিকুজ্জামান আরও উল্লেখ করেন, “নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙাটা অত্যন্ত কঠিন। চার-পাঁচটি বড় করপোরেট গ্রুপের পাশাপাশি অসংখ্য অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। শত শত মানুষের জড়িত থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়েছে। সঠিক ব্যবস্থা না নিলে দালালচক্র ও আড়তদারের আধিপত্য কমবে না।
বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম-বিশেষ করে ভেজাল ওষুধ, মেয়াদোত্তীর্ণ শিশু খাদ্য বিক্রি, অতিরিক্ত মূল্য আদায়—এসব বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে ক্যাবকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ফার্মেসিগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। জনগণকে জানাতে হবে তারা কোন ক্ষেত্রে প্রতারিত হচ্ছেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. আ.ন.ম. বজলুর রশীদ। তিনি বলেন, ক্যাব জনস্বার্থে কাজ করছে বলেই তাদের প্রতিবেদন ও সুপারিশ জনগণ খুব দ্রুত বিশ্বাস করে। ভোক্তার অধিকার, খাদ্যপণ্যের নিরাপত্তা ও বাজারের স্বচ্ছতা নিয়ে ক্যাব যে তথ্য সংগ্রহ করে, তা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এছাড়া রাজশাহী জেলা ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুনের সঞ্চালনায় খাদ্যের গুণগত মান নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন, গেইনের প্রকল্প সমন্বয়কারী লাইলুন নাহার। এছাড়া প্রশিক্ষণে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিভাগের ৮ জেলার ক্যাবের সভাপতি, সম্পাদক ও সদস্যরা অংশ নেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)