রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১


প্রচণ্ড তাপদাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঝরে পড়ছে আমের গুটি, দুশ্চিন্তায় চাষি

জেলা সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত:২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:১২

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচণ্ড খরা ও তাপদাহে ঝড়ে পড়ছে আমের গুটি। গত কয়েক দিনে এক টানা তাপদাহের কারণে জনজীবন অতিষ্ট। এতে বোঁটার রস শুকিয়ে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। সেচ ও নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও টেকানো যাচ্ছে না আম। আর এতেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। এবার আমের উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কাও করছেন তারা। চাষিদের দাবি, ইতোমধ্যে অনেক বাগানে প্রায় ৩০ শতাংশ আমের গুটি ঝরে গেছে।

সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের আমচাষি লিয়াকত আলী বলেন, তীব্র খরায় আমের বোঁটার রস শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। চলতি মৌসুমে আমের মুকুল কম ছিল। তারপরও শুরুর দিকে ঘন কুয়াশা ও চৈত্রের বৃষ্টিতে প্রথম দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মুকুল। এরপর যে তীব্র তাপদাহ চলছে এতে করে গাছে আম ধরে রাখায় অনেক কষ্টকর।

শুধু লিয়াকত আলী নন, এমন বৈরী আবহাওয়া আমের গুটি ঝরে পড়ার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলার সব আমচাষিরা।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন শামীম খান বলেন, এমনিতেই এ বছর শীতের কারণে মুকুল দেরিতে এসেছিল, তারপরও অসময়ের বৃষ্টিতে মুকুল ঝরে যায়। আর এখন বৃষ্টির অভাবে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। এমন তাপদাহ আরও কিছুদিন চললে আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে আমাদের। বৈরী আবহাওয়া আর অনাবৃষ্টির কারণে এ বছর আম উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। ফলে স্বস্তিতে নেই আম চাষিরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাঙ্গো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, জেলায় সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় শিবগঞ্জে। কিন্তু এবার শিবগঞ্জে আমের অবস্থা খুবই খারাপ। আমাদের চাষিদের আম বিক্রি করে কীটনাশক খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। গত এক সপ্তাহ ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চলমান রয়েছে। ফলে প্রচণ্ড তাপ ও খরায় আমের বোটা শুকিয়ে আম ঝরে যাচ্ছে। এতে আমচাষিরা লোকসানের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে খরায় আম ঝরে পড়া থেকে বাঁচতে অনেকেই গাছে পানি সেচ দিচ্ছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় গাছগুলোতে এবার মুকুল কম এসেছে। তবে ছোট গাছে ভালো মুকুল আছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করা গেলে, কৃষি বিভাগ যে সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার কাছাকাছি যাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার সব উপজেলায় অতিরিক্ত খরা মোকাবিলায় আমের গুটি টিকিয়ে রাখতে চাষিদের পরামর্শ দিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বছর জেলার ৫ উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবার জেলায় আমের উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার টন।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:৫৮ ভোর
যোহর ১১:৪৫ দুপুর
আছর ০৩:৩৬ বিকেল
মাগরিব ০৫:১৫ সন্ধ্যা
এশা ০৬:৩১ রাত

রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪