শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইতোমধ্যে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। চাঁদপুর জেলায় এ বছর পশুর চাহিদা তুলনায় সংকট রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার। জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর বলছে, সংকট নিরসনে অন্য জেলা থেকে পশু আমদানি করা হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর থেকে জানা গেছে, জেলায় খামারি আছেন ৩ হাজার ২৬৯ জন। এসব খামারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া লালন-পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব পশুর সংখ্যা ৬১ হাজার ৪৮৯। কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৭৮ হাজার।
জেলা সদরের বাগাদী ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামের খামারি খালেদ মুন্সি বলেন, ‘আমি প্রতিবছরই কোরবানিতে বিক্রির জন্য ২৫ থেকে ৩০টি গরু লালন পালন করি। এ বছর প্রায় ৩০টি ষাঁড় বিক্রির জন্য প্রস্তুত আছে। এগুলো আমার খামারের নিজস্ব জাতের। ঘাসসহ দানাদার খাবার খাওয়ানো হয়। তবে খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের খরচও বেড়েছে। আমার খামারে ৮০ হাজার থেকে শুরু করে দুই লাখ টাকা মূল্যমানের ষাঁড় আছে।’
বাগাদী ইউনিয়নের অপর খামারি আহমদ উল্লাহ। তাঁর খামারে আছে প্রায় শতাধিক গরু। এসবের মধ্যে কোরবানি উপলক্ষে বিক্রির জন্য প্রস্তুত প্রায় অর্ধশত ষাঁড়। খামারের শ্রমিকেরা জানান, দেশি জাতের ষাঁড়ের চাহিদা বেশি। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির আগে লোকজন গরু কিনতে আসেন। তবে এখনো বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। তাঁরা ঘাসসহ দানাদার খাবার দিয়ে এসব গরু লালন-পালন করেন।
নানুপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা সব সময় কোরবানির জন্য দেশি জাতের ভালো গরু কেনার চেষ্টা করি। অনেকে ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে কিংবা খামারেই গরু কিনতে পছন্দ করেন। কয়েকটি খামার ঘুরে দরদাম করে দেখলাম গত বছরের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বেশি।’
জেলার অন্যতম পশুর হাট সদরের সফরমালি ও হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলায় কোরবানির পশু বেশি পরিমাণে উঠেছে এই দুই হাটে। ক্রেতারা এখন শুধুমাত্র দরদাম করছেন। এই সপ্তাহের শেষ দিকের হাটগুলোতে বেচাকেনা বাড়বে।
কোরবানির পশুর হাট বসে জেলা সদরের ইচুলী চৌরাস্তায়। এই হাটের ইজারাদার জাকির হোসেন খান বলেন, ‘আগামী ১০ জুন থেকে এই হাটে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন ব্যাপারীরা। আবার প্রতিবছরই এই হাট থেকে পার্শ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী থেকেও লোকজন গরু কিনতে আসেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত এই পশুর হাট চলবে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, ‘জেলার ৮ উপজেলার ৩ হাজারের বেশি খামারি এ বছর কোরবানিতে বিক্রির জন্য ৬১ হাজার ৪৮৯টি পশু প্রস্তুত করেছেন। জরিপ করে দেখা গেছে জেলার চাহিদানুসারে আরও ১৭ হাজার পশুর ঘাটতি আছে। তবে এই ঘাটতি থাকবে না। কারণ উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক ব্যাপারী জেলার হাটগুলোতে পশু নিয়ে আসবেন। আশা করি আমাদের চাহিদা পূরণ হবে এবং সবাই কোরবানি করতে পারবেন।’
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)