শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা আরও কমেছে। মাঝে কয়েকদিন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করলেও বছরের প্রথম দিন থেকে তাপমাত্রা কমছে উত্তরের এই জেলায়। গত ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় তাপমাত্রা কমেছে দুই দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত রোববার পঞ্চগড়ে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও দুই দিনের ব্যবধানে তা কমে আজ ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে নেমে গেছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। তিনি বলেন, হিমালয়ের কাছে হওয়ায় উত্তর পশ্চিমাঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় এমন শীত অনুভুত হচ্ছে। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
তিন ঘণ্টা আগে ভোর ছয়টায় ১০.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল সোমবার ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
কয়েকদিন থেকেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে জেলাজুড়ে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাসে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত হিমেল হাওয়া ও কুয়াশায় ঢাকা থাকে পঞ্চগড়। তবে দুপুরের দিকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও থাকে না কোনো উত্তাপ। দিনের বেলায় শীত কিছুটা কম থাকলেও প্রতিনিয়ত থাকছে ঠান্ডা বাতাস। তাছাড়া তীব্র শীতের কারণে দিন দিন হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শীতজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
শীতকে উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে কাজে বের হচ্ছেন পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়ছেন কাজে।
মহানন্দা ও ডাহুক নদীতে পাথর তোলার সময় ইরফান, আজগর ও মোতালেবসহ কয়েকজন শ্রমিক জানান, নদীর পানি বরফের মতো ঠান্ডা। কিন্তু কী করব, পাথর তোলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। এ পাথর তুলেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তাই পেটের তাগিদেই বরফ জলে নেমে পাথর তুলতে হচ্ছে।
চা শ্রমিক সাইফুল জানান, হিমশীতল বাতাস ও কনকনে শীতের মধ্যেই ভোরে চা বাগানে পাতা তুলতে এসে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু কী করব, জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।
এদিকে পঞ্চগড় ছাড়াও এর আশপাশের জেলাগুলোতেও কয়েক দিন ধরে শীতের মাত্রা বেড়েছে। তবে গতকাল থেকে শীতের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যায়। এসব এলাকায় সরকারিভাবে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এই জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)