শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কুমিল্লায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে মো. জাকির হোসেন নামে এক লন্ডন প্রবাসীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে ওই প্রবাসীর বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সূচনা আক্তার বাদী হয়ে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের ৭ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেছেন।
ভুক্তভোগী জাকির হোসেন জেলার বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ি দক্ষিণ ইউনিয়নের বালুয়া গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ লন্ডনে বসবাস করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার মৃত মনু মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া, লেদা মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম, গেদা মিয়ার ছেলে মনির হোসেন, হারুন উদ্দিনের ছেলে জালাল মিয়া এবং জোহর আলীর ছেলে বোরহান উদ্দিন। তারা বিএনপির কোনো পদ-পদবিতে না থাকলেও সরকার পতনের পর থেকে এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন বলে জানা গেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আক্তার হোসেন বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বরুড়া থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, দুলাল ও একই এলাকার লেদা মিয়ার ছেলে জহির এবং মনিরসহ বেশ কয়েকজন সরকার পতনের পর থেকে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছেন। ভিকটিম জাকির হোসেন গত ১০ বছর ধরে স্বপরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন। কয়েকদিন আগে তিনি দেশে আসেন। দেশে এসেই নিজ বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের জন্য একটি পারিবারিক ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। সে অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় এলাকার দুলাল মিয়াসহ বেশ কয়েকজন প্রবাসী জাকিরকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতে থাকেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থানীয় শিলমুড়ি বাজারে কেনাকাটা করতে যান ভিকটিম জাকির। এ সময় দুলাল মিয়া তাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে ‘আমাকে দাওয়াত দিলি না কেন’ বলেই পাশে থাকা একটি ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। এ সময় দুলালের সহযোগী হিসেবে জহির, মনির, জালাল ও বোরহান উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রসহ ভিকটিম জাকিরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে চলে যান। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। অভিযুক্তরা তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েও ভুক্তভোগী জাকির ও তার সঙ্গে থাকা স্বজনদের ভয়ভীতি দেখান। পরে ওইদিন বিকেলে আবার জাকিরের বাড়িতে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেন অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভুক্তভোগী জাকির লন্ডনে গিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী প্রবাসী জাকির হোসেনের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সূচনা আক্তার বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন খুবই সাংঘাতিক। ঘটনার পর থেকে আমরা সবাই এলাকা ছাড়া। পলাতক থেকে মামলাটি করেছি। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমরা রাষ্ট্রের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার আশা করছি।
অভিযুক্তদের একাধিকবার ফোন করা হলেও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তারা সংযোগ কেটে দেন। পরে আর ফোন রিসিভ করেননি।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, আমি বরুড়া থানায় নতুন যোগ দিয়েছি। আদালতের তদন্তের নির্দেশ থানায় এসে পৌঁছালে সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)