রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কিশোরগঞ্জের সঙ্গে নেত্রকোনার সংযোগ করেছে মদন উপজেলার বর্নী নদীতে নির্মিত সেতুটি। ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় নির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের আগেই অ্যাপ্রোচ ধসে গেছে। ঠিকাদারের অনিয়ম ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই সেতুর অ্যাপ্রোচের এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মদন উপজেলা কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল ও নেত্রকোনার মদন উপজেলার সীমান্তে বর্নী নদীর ওপর সেতু না থাকায় তিনটি উপজেলার মানুষ দুর্ভোগে ছিল। নদীর উত্তরে তাড়াইলের ধলা ইউনিয়নের ধলা গ্রাম ও দক্ষিণে মদনের ফতেপুর ইউনিয়নের ধানকুনিয়া গ্রাম। এ স্থানে এসে তাড়াইল-মদন সড়ক দ্বিখন্ডিত হয়েছিল। সারা বছর তাদের ঝুঁকি নিয়ে ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার হতে হয়েছে।
সম্প্রতি তাড়াইল ও মদন উপজেলার প্রশাসন বর্নী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন পাঠায়। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২০১৮ সালের ৮ই মার্চ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে কিশোরগঞ্জের পিপিএল চ্যালেঞ্জার নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কথা ছিল দেড় বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের চার বছরের বেশি সময়েও নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।
সরেজমিন দেখা গেছে, ১৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের বর্নী নদীর মূল সেতুর কাজ শেষ। তবে সেতুর ওপর ব্যবহৃত পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। সেতুর দুই পাশের এ্যাপ্রোচে বড় বড় ফাটল ধরে ধসে গেছে। সেতু সংযোগ সড়কের নিচের মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুটির পশ্চিম পাড়ের এ্যাপ্রোচের পিলার ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। নির্মাণ কাজে এমন অনিয়মের কারণে সেতুটির স্থায়ীত্বকাল নিয়ে স্থানীয়দের মনে এখন নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম, আব্দুল জব্বার, ফরিদ চৌধুরী, আলম মিয়াসহ অনেকেই জানান, এই সেতুটি নির্মাণ কাজে শুরু থেকেই অনিয়ম করে ঠিকাদার। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছে। প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়েছে। সেতুটির কাজ কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে। দুই পাশের এপ্রোচ এখনই ভেঙে পড়ছে। এলজিইডির লোকজনকে অবগত করা হলে তারাও কোনো গুরুত্ব দেয়নি। সেতুটি এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ্যাপ্রোচের ব্লক ও পিলার ধসে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে আমি সরজমিনে পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারকে বলা হয়েছে এগুলো দ্রুত মেরামত করার জন্য। ঠিকাদার এখনো পুরো বিল পায়নি। এ্যাপ্রোচসহ যে সকল কাজ এখনো বাকি আছে সেগুলো মেরামত না করলে বকেয়া বিল দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কিশোরগঞ্জের পিপিএল চ্যালেঞ্জার নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ম্যা কৃত্তিবাসের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলে রিসিভ না করায় তার মতামত দেওয়া সম্ভব হয়নি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)