সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২


ব্যাংক থেকে বিকাশ-নগদ-রকেটে টাকা পাঠাতে গুনতে হবে ফি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

প্রকাশিত:১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৫২

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

দেশে নগদ অর্থ লেনদেন কমাতে জাতীয় পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এর মাধ্যমে ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের মধ্যে ইন্টারঅপারেবল লেনদেন চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই ব্যবস্থায় গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট বা অন্য এমএফএস অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠাতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হবে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে এনপিএসবি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইন্টারঅপারেবল বা আন্তঃলেনদেন করতে পারবে। এর আওতায় ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও ডিজিটাল ব্যাংক একক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকবে। ফলে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে এমএফএস বা পিএসপি এবং বিপরীতমুখীভাবে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ স্থানান্তর করতে পারবেন। ইন্টারঅপারেবল ব্যবস্থায় অর্থ প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রেরক ব্যাংক, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও এমএফএস প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে সর্বোচ্চ ০.১৫%, ০.২০% ও ০.৮৫% ফি আদায় করতে পারবে।

অর্থ প্রেরণের আগে গ্রাহককে এই ফি সম্পর্কে জানাতে হবে এবং তা প্রেরকের হিসাব থেকে কর্তন করতে হবে। তবে প্রাপকের কাছ থেকে কোনো চার্জ নেওয়া যাবে না।

সার্কুলারের তথ্য অনুযায়ী, এখন থেকে ব্যাংক থেকে মোবাইল হিসাবে ১০০০ টাকা পাঠাতে গ্রাহকের কাছে থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা ৫০ পয়সা নিতে পারবে ব্যাংক। অন্যদিকে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) থেকে মোবাইলে টাকা পাঠাতে খরচ হবে ২ টাকা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ, রকেট) থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে সর্বোচ্চ ৮ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত চার্জ নিতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই উদ্যোগের ফলে দেশের ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের পথ আরও সুগম হবে। নগদ অর্থ ব্যবহারের ওপর নির্ভরতা কমে যাবে এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন হবে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই পদক্ষেপ ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে ত্বরান্বিত করবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ আরও বাড়বে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক অনুষ্ঠানে জানান, অর্থনৈতিক লেনদেনের জন্য কাগজের নোট ছাপাতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রায় ১৪ হাজার শাখায় এই নোট পাঠাতেও ঝুঁকি এবং নানা রকম বিড়ম্বনা থাকে। কাগজের নোটে লেনদেনে সময় অপচয়ের পাশাপাশি আছে নানা রকম সংক্রামক রোগের ঝুঁকি। এ অবস্থায় দৈনন্দিন জীবনে ‘ক্যাশলেস ট্র্যানজেকশন’ বা ‘নগদবিহীন লেনদেন’ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এটি নিশ্চিত করা গেলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ছাড়াও অর্থ পাচার এবং দুর্নীতিরোধ করা সম্ভব। তাছাড়া নগদবিহীন লেনদেন মানুষের সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি করে।

বাংলাদেশে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপ্রাপ্ত মোট ১৩টি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো ও জনপ্রিয় দুটি সেবা হলো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ এবং বিকাশ লিমিটেডের ‘বিকাশ’। এছাড়া আরও রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘মাই ক্যাশ’, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ‘আইবিবিএল এমক্যাশ’, ট্রাস্ট অ্যান্ড পে লিমিটেডের ‘ট্যাপ’, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ‘ফার্স্ট ক্যাশ’, ইউসিবি ফিনটেক কোম্পানি লিমিটেডের ‘উপায়’, ওয়ান ব্যাংকের ‘ওকে ওয়ালেট’, রূপালী ব্যাংকের নিজস্ব এমএফএস সেবা, সাউথইস্ট ব্যাংকের ‘টেলক্যাশ’, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ‘ইসলামিক ওয়ালেট’, মেঘনা ব্যাংকের ‘মেঘনা পে’ এবং বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পরিচালিত ‘নগদ’, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন অনুমোদনপ্রাপ্ত।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপ্রাপ্ত পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) প্রতিষ্ঠান বর্তমানে নয়টি। এর মধ্যে রয়েছে আইপে সিস্টেমস লিমিটেড, ডি মানি বাংলাদেশ লিমিটেড, রিকার্শন ফিনটেক লিমিটেড, গ্রিন অ্যান্ড রেড টেকনোলজিস লিমিটেড, প্রগতি সিস্টেমস লিমিটেড, এবিজি টেকনোলজিস লিমিটেড, ডিজিটাল পেমেন্টস লিমিটেড, শেবা ফিনটেক লিমিটেড এবং শামাধান সার্ভিসেস লিমিটেড।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ৪:৩৩ ভোর
যোহর ১১:৫১ দুপুর
আছর ৪: ১২ বিকেল
মাগরিব ৫: ৫৫ সন্ধ্যা
এশা ০৭: ০৮ রাত

সোমবার ১৩ অক্টোবর ২০২৫