শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। গতকাল শনিবার পর্যন্ত প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন- এ বছর মরিচের আবাদ শুরুর সময় প্রচণ্ড খরা ও গরমে মরিচগাছগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ফলন কমেছে। এছাড়া ভারী বর্ষণসহ বিভিন্ন করণে কাঁচা পণ্যের সরবরাহ কমে গেছে, ফলে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে আমদানি করা ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি। আর দেশি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকা। অবশ্য পাড়া-মহল্লায় এর চেয়ে বেশি দামেও কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় কাঁচা মরিচ আকারে দেশি মরিচের তুলনায় কিছুটা বড়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন- মরিচের উৎপাদনস্থলেই দাম বেশি। যেমন দেশের কাঁচা মরিচের অন্যতম উৎপাদন এলাকা বলে পরিচিত পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার বিভিন্ন খুচরা বাজারে গতকাল ৩৬০ টাকা কেজি স্থানীয় (দেশি) কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে। স্থানীয় পাইকারি বাজারে কৃষকেরা এই মরিচ বিক্রি করেছেন ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। আবার দিনাজপুরের বিরামপুরের বাজারে গতকাল দেশি জাতের কাঁচা মরিচ ২০০ ও হাইব্রিড জাতের কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
কৃষকেরা বলছেন, গত বছরের মতো এবারও প্রচণ্ড খরা ও গরমের কারণে মরিচের ফলন কম হয়েছে। ফলে বাজারে মরিচ আসছে খুব কম। তাই দাম বাড়তে শুরু করেছে। তাদের ভাষ্য- বাজারে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি মরিচ বিক্রি করেও তাদের লোকসান হচ্ছে।
চলতি বছর কোরবানি ঈদের মাসখানেক আগে থেকেই মরিচের দাম বাড়তে শুরু করে। মাঝখানে দাম কিছুটা কমলেও প্রায় ১৫ দিন ধরে দাম বাড়ছেই। গত বছরও কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছিল। ওই সময় কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তখন দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয়।
সবজি ও কাঁচা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক কারণকে দায়ী করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। শনিবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ভারী বর্ষণের কারণে দেশের ১৮টি জেলায় পানি বেড়েছে। এতে ওই এলাকাগুলো থেকে কাঁচা পণ্যের সরবরাহ কমেছে। ফলে পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে অসাধু কারও ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে হয় না। আমি মনে করি এ পরিস্থিতি সাময়িক। তবে বাজারে আমাদের নজরদারি থাকবে। কারসাজির কোনো অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যদিও মাছ, মাংস, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, ভোজ্যতেল, চিনি, আটাসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম অনেক দিন ধরেই চড়া। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা, আর আলুর কেজি ৬০-৬৫ টাকা। বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমলেও দেশে সেভাবে কমছে না।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)