শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ এর প্রথম দিনে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ চার দফা দাবি জানান এবং শহীদদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করেন।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেল তিনটায় রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। নানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে তারা কর্মসূচিতে যোগ দেন। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হওয়া মিছিল ক্যাম্পাসে প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে এসে জড়ো হয়।
এসময় তারা ‘গেস্টরুম গণরুম, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে হবে না, গণরুম গেস্টরুম’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন ডাইরেক অ্যাকশন’, ‘টু জিরো টু ফোর ফ্যাসিজম নো মোর’, ‘বিচার চাই বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান’, এসব স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ দুটি করে মোট চার দফা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।’
সারজিস বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।’
আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারবার কায়েমের চেষ্টা করেছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নতুন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
হাসনাত বলেন, ‘প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।’
বিচারব্যবস্থা নিয়ে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের বিচার বিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নিজেদের সুবিধার্থে দলীয় লোক বসিয়েছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করে নিরীহ জনগণ ও সাধারণ ছাত্র জনতার ওপর ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে বিচার নিশ্চিত করেনি, নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। তার ভুক্তভোগী হয়ে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ।’
বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমরা বিচার বিভাগের উদ্দেশে বলতে চাই- ‘এই ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ও তার দোসরদের যতদিন না বিচার করা হবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। অবিলম্বে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের দেশে এনে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ ও ছাত্র জনতার হত্যাকাণ্ডের বিচারে সাজা দিতে হবে।’
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)