শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
কেবল পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও স্পষ্টভাবে নিজের মতামত তুলে ধরাই কৃতি শ্যাননের স্বভাব। অতীতে নানা বিষয়ে তুলনা টানতে গিয়ে অনেকে চলচ্চিত্র জগতের পারিশ্রমিক বৈষম্যের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। এদিক থেকে কৃতি অনেকটাই ব্যতিক্রম। অন্যদের মতো কাজের তুলনা দিতে গিয়ে নয়, সরাসরি পারিশ্রমিক বৈষম্য নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন তিনি।
আইডিভাসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, চলচ্চিত্র জগতে এখনও পারিশ্রমিকের বৈষম্য রয়ে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেন না কৃতি। সম্প্রতি কাজের বিষয়ে লিঙ্গ বৈষম্য এবং পারিশ্রমিকের সমতা সম্পর্কে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন; যা নিয়ে এই অভিনেত্রীর সঙ্গে অনেকের মতবিরোধ হতে পারে বলেও বলিউড বাসিন্দাদের অনেকের মত। কৃতি রীতিমতো প্রশ্ন তুলেছেন এই বলে যে, ২০২৫ সালে এসে নারী তারকারা এমন বৈষম্যের শিকার হওয়ার যোগ্য কিনা?
এ নিয়ে সত্যি আমাদের আলাদা করে ভাবা উচিত। শুধু এমন মতামত তুলে ধরাই নয়, কাজের মাধ্যমেও তিনি বৈষম্য দূরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ‘ক্রু’ এবং ‘দো পাত্তি’ সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজকের ভূমিকায় পা রাখার মাধ্যমে নিজ ভাবনার প্রমাণও তুলে ধরছেন।
জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী কৃতি শ্যাননকে সম্প্রতি সিএনএন-নিউজ ১৮-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কি বলিউডে পারিশ্রমিকের বৈষম্য নিয়ে চিন্তিত? এর উত্তরে ‘বেরেলি কি বরফির এই অভিনেত্রী বলেছেন, ‘আসলে, সমস্ত শিল্প বিবেচনা করে আমি বুঝতে পারছি না কেন পারিশ্রমিকের সমতা বিদ্যমান। কারণ, কিছু ভূমিকা এবং কাজের জন্য আপনি পুরুষ বা মহিলা, এটি কোনো ব্যাপার নয়। পারিশ্রমিক একই হওয়া উচিত। হ্যাঁ, চলচ্চিত্রে আমরা অনেক দিন ধরেই এই কথোপকথনটি করে আসছি। বিশ্বাস করুন, এটি আমাদের অন্য যে কারও চেয়ে এই বিষয়টি আমাকে বেশি মানসিক চাপ দেয়।’
শ্যানন আরও বলেছেন, ‘একজন অভিনেতার পারিশ্রমিকের ধারণাটি তিনি বোঝেন যে, দর্শকদের আকর্ষণ করার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে তাদের পারিশ্রমিক কত। তিনি উল্লেখ করেন যে, নারীপ্রধান চলচ্চিত্রগুলো কম এবং পুরুষপ্রধান চলচ্চিত্রের সমান বাজেটের হয় না।’
কৃতি বলেছেন, ‘একটি নারীপ্রধান সিনেমার কাজ হাতে নিলে দেখা যায়, তাঁর বাজেট কোনোভাবেই পুরুষপ্রধান সিনেমার সমান হয় না। প্রযোজকরা ভয়ে থাকেন নারীপ্রধান সিনেমা সহজে লগ্নি তুলে আনতে পারবে কিনা– তা নিয়ে। এ বিষয়টি এমনভাবে অনেকের মাথায় গেঁথে গেছে যে, এখন সবাই ভাবে, নারীপ্রধান সিনেমা মানেই কম আয়, আর পুরুষপ্রধান সিনেমা মানেই বড় অঙ্কের লাভের সম্ভাবনা। কিন্তু আমি কোনোভাবেই এই বিষয়টি সত্যি বলে মেনে নিতে পারি না। সিনেমার সাফল্য এখন আর পুরুষ বা নারীর ওপর নির্ভর করে না– এটি বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে।’
কৃতির কথায়, ‘তিনজন মহিলার নেতৃত্বে ‘ক্রু’ যখন দর্শকদের বিনোদন দিয়েছে এবং বক্স অফিসে ভালো পারফর্ম করেছে, তখন এটি আমাকে আশা দিয়েছে। এটি দেখিয়েছে যে, নারীপ্রধান চলচ্চিত্রগুলোকে অগত্যা গুরুতর হতে হবে না; সেগুলো মজাদার, বিনোদনমূলক হতে পারে এবং বিশাল পরিসরে শুটিং করা যেতে পারে। পরিস্থিতি তখনই পরিবর্তিত হবে, যখন প্রযোজকদের ঝুঁকি নেওয়ার হৃদয় থাকবে, তার জ্বলন্ত প্রমাণ ‘গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি’ সিনেমাটি।’
এদিকে কৃতি শ্যানন এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচালক আনন্দ এল রাইয়ের ‘তেরে ইশক মে’ সিনেমার কাজ নিয়ে। এতে তাঁর বিপরীতে দেখা যাবে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার সুপারস্টার ধানুশকে। এছাড়াও তিনি কাজ করছেন ‘ককটেল ২’ সিনেমায়।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)