শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ইউরোপীয় সম্প্রচার ইউনিয়ন দ্বারা আয়োজিত ৬৮তম ‘ইউরোভিশন সং কনটেস্টে’র মুকুট জিতে নিলো সুইজারল্যান্ডের গায়ক নিমো মেটলার।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযাযী, মোট ২৫ দেশের প্রতিযোগীর মধ্যে ২৪ বছর বয়সী নিমো তার ‘দ্য কোড’ গানের জন্য জয়ী হয়েছেন। অপেরা এবং হিপ-হপ কম্পোজিশনের এই গানটি ৫৯১ পয়েন্ট অর্জন করে জুরিদের বিচারে এবারের শ্রেষ্ঠ সংগীত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
নিমো নিজেকে একজন ‘নন-বাইনারি’ (যদি কোনো ব্যক্তি নিজেকে আলাদা করে পুরুষ কিংবা নারী হিসেবে সংজ্ঞয়িত করতে না চান) হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। আর ‘দ্য কোড’ শিরোনামের গানে নিমো নিজের ‘নন-বাইনারি’ পরিচয়ের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন।
সুইডেনের মালমো অ্যারেনায় শনিবার এ প্রতিযোগিতার ৬৮তম আসর বসে। আসরের গ্র্যান্ড ফিনালেতে সুইডেন, ফ্রান্সসহ ইউরোপের ২৫ দেশের প্রতিযোগীর সঙ্গে বিজয়ীর নাম ঘোষণার পর গেলবারের জয়ী সুইডিশ গায়িকা লরিন ক্রিস্টাল ট্রফি তুলে দেন নিমোর হাতে।
ট্রফি হাতে নিয়ে নিমো বলেন, ‘আমি আশা করি এই প্রতিযোগিতা তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবে এবং এই বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য ইউরোভিশন শান্তির জায়গা ও মর্যাদা নিয়ে হাজির হবে।’
লরিন বলেন, ‘নিমোর জন্য এই পুরস্কার জরুরি ছিল। একজন নন-বাইনারির প্রতি আমাদের সমর্থন প্রকাশও প্রয়োজন ছিল। ইউরোভিশন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বৈচিত্র্যের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এই প্রেমময় জায়গাটি আমরা শিল্পীরা তৈরি করেছি সৃজনশীলতার মাধ্যমে।’
এছাড়া এ প্রতিযোগিতায় দর্শকদের ভোটে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন ক্রোয়েশিয়ার শিল্পী বেবি লাসাগনা; তিনি ‘রিম টিম তাগি ডিম’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছিলেন।
ইউক্রেইনের অ্যালোয়না এবং জেরি হেলি হয়েছেন তৃতীয়; ফ্রান্সের স্লিমেন নেবেচি চতুর্থ স্থান পেয়েছেন। ইসরায়েলের আলোচিত শিল্পী ইডেন গোলান ‘হারিকেন’ শিরোনামের গান গেয়ে পঞ্চম স্থান দখল করেছেন। আর এ প্রতিযোগিতায় যুক্তরাজ্যের অবস্থান ১৮তম।
এবারের প্রতিযোগিতায় ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার ছায়া ছিল।
ইউরোভিশনে ইসরায়েলকে সুযোগ দেওয়ায় সপ্তাহখানেক ধরে মালমোতে উত্তেজনা চলেছে। গোলান যখন মহড়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তখন তাকে উপস্থিত দর্শকরা বিদ্রূপ করেন ও দুয়োধ্বনি দেন।
প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে হাজারো মানুষ সুইডেনের মালমোতে পথে নামেন। আর চূড়ান্ত পর্বের আগে মালমো অ্যারেনার সামনেও মানুষ বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের প্রতিযোগীকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির দাবি তোলেন। মঞ্চে উঠে পর্তুগালের প্রতিযোগী আইওলান্ড গান শুরুর আগে গিটার উঁচিয়ে বলেন. “শান্তির জয় হোক।“
ইউরোপীয় সম্প্রচার ইউনিয়ন দ্বারা আয়োজিত বার্ষিক গানের এ প্রতিযোগিতাটি, ১৯৫৬ সালের ২৪ মে সুইজারল্যান্ডের লুগানোতে প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)