বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ফরিদপুরে ১৫ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা শুরু হয়েছে। সামাজিক বন বিভাগ ও ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৃক্ষমেলা শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। এটি সারা শহর প্রদক্ষিণ করে সিভিল সার্জন অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ। তিনি বলেন, গাছ আমাদের বন্ধু। পরিবেশ ও মানব প্রজাতি রক্ষায় বেশি বেশি গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। গাছ শুধু আমাদের ফল-ফসল আর অক্সিজেনই দেয় না, ঝড়, জলোচ্ছাসসহ নানা দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। একটি দেশে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকার কথা থাকলেও আমাদের রয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ। বনায়ন বৃদ্ধিতে আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। স্কুল-কলেজে রাস্তাঘাট এবং এর আশেপাশে গাছ লাগাতে হবে। এছাড়ও নিজ নিজ বাড়ির আঙিনায় গাছ লাগিয়ে সবুজ পৃথিবী রচনা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।
এ.কে. আজাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি শোষণহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। যেখানে মানুষ মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। বর্তমান সমাজে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বাড়ছে, মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে সম্পদ চলে যাচ্ছে, বাকিরা নিঃস্ব হচ্ছে। সমাজে সম্পদের সুষম সম্পদ বণ্টনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে সব ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম রুখে দাঁড়াতে হবে। এজন্য ফরিদপুরের সরকারি কর্মকর্তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। সংসদ সদস্য বলেন, যখন আমি জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, তখন এখানে সব দপ্তরে ভালো ভালো যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা পেয়েছি।
ফরিদপুরে পদ্মার পাড়ে অবৈধ বালু উত্তোলন হচ্ছে, যা বন্ধ না করলে শহর হুমকির মুখে পড়বে মন্তব্য করে সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদ বলেন, আমি ঢাকায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। জেলা প্রশাসক সাহেব তাদেরকে ফরিদপুরে আমন্ত্রণ জানিয়ে এর প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে পারেন। সামাজিক বনায়নে সরকারি বাজেটের পাশাপাশি নিজস্ব বাজেট দিয়ে বনায়নকে ফরিদপুর সদরে শতভাগ সফল করার অঙ্গীকার করেন তিনি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য এ.কে. আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না তাসনীম, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য গোলাম মাওলা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভুঁইয়া, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সরকারি বন কর্মকর্তা মোস্তফা আল হোসেন, বেসরকারি নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি আক্কাস হোসেন, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মো. সোহেল রানা।
সভায় বক্তারা বৃক্ষরোপনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন।
তারা বলেন, গাছ মানুষকে অক্সিজেন দেয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। সবাইকে একটি করে ফলজ-বনজ ও ঔষধি গাছ রোপন করতে হবে এবং সেগুলোকে পরিচর্যা করতে হবে। বক্তারা চরাঅঞ্চলে বনায়ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, এ বছর দেড় লাখ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া পদ্মা নদীর ভাঙনরোধে আরও চারা রোপন করা হবে। বনায়নের ব্যবস্থা করা হবে। এরপর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এ বছর বৃক্ষমেলায় রয়েছে মোট ৩৫টি স্টল।
এর আগে সকালে বেলুন উড়িয়ে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। পরে অতিথিরা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)