রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বৈধ নথিপত্র ছাড়াই বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসীদের শনাক্ত, আটক এবং প্রত্যাবাসনের ব্যাপক প্রচেষ্টা শুরু করেছে। দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারও করেছে। দিল্লিতে অবৈধ উপায়ে বসবাসকারী ১৭৫ বাংলাদেশিকে শনাক্ত করার তথ্য জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
রোববার দেশটির সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে দিল্লি পুলিশ বলেছে, ‘‘বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবৈধ বসবাসের বিষয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায় আউটার ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ দিল্লিতে বৈধ নথিপত্রবিহীন ব্যক্তিদের সনাক্ত, আটক এবং প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।’’
সম্প্রতি আউটার ডিস্ট্রিক্টের আওতাধীন এলাকায় দিল্লি পুলিশ একাধিক যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুরো জেলাজুড়ে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের শনাক্তের লক্ষ্যে নিবিড় তল্লাশি অভিযান পরিচালনা ও তথ্য সংগ্রহের জন্য ডিস্ট্রিক্ট ফরেইনার সেলের কর্মকর্তাসহ থানা পুলিশ ও পুলিশের স্পেশাল শাখার সমন্বয়ে একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে।
যৌথ অভিযান চলাকালীন আউটার ডিস্ট্রিক্টের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের বাসায় বাসায় গিয়ে তল্লাশি ও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ বলেছে, আউটার ডিস্ট্রিক্টের আওতাধীন এলাকায় বসবাসকারী ১৭৫ বাংলাদেশি সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই বাংলাদেশিদের পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ, তাদের নথিপত্র সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। পরে তাদের নিজ নিজ এলাকায় স্থানীয় পুলিশের সাথে সমন্বয় করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ভারতের রাজধানীতে বাংলাদেশিরা অবৈধ উপায়ে বসবাস করছেন বলে দিল্লির গর্ভনরের কাছে দেশটির কিছু গোষ্ঠী চিঠি দেওয়ার পর পুলিশ অভিযান জোরদার করেছে। এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতীশি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চিঠি লেখেন। এতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করা ছাড়াই দিল্লিতে ‘‘বিপুলসংখ্যক অবৈধ রোহিঙ্গা অভিবাসীদের’’ বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
চিঠিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, দিল্লিতে অবৈধ অভিবাসীদের বসবাসের এই ঘটনা বছরের পর বছর ধরে চলছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে রোহিঙ্গাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও তাদের ঠিকানা প্রকাশ করার আহ্বান জানান তিনি। দিল্লির সরকার ও এর বাসিন্দাদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া রোহিঙ্গাদের নতুন করে আর পুনর্বাসন করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন অতীশি।
এদিকে, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দিল্লি সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেবা ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির (এএপি) বিরুদ্ধে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক সুরক্ষিত করতে দিল্লিতে অবৈধ রোহিঙ্গা অভিবাসীদের বসতি স্থাপনের সুযোগ দিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইর সঙ্গে আলাপকালে দিল্লি বিজেপির সভাপতি সচদেবা বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিরা দিল্লির নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।’’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, এএনআই।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)