শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৩৩ জনকে মুক্তি দেবে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১ হাজার ৯৭৭ জনকে ছেড়ে দেবে দেশটির সরকার।
এর মধ্যে বিরতির প্রথম দিন রোববার ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ৯৫ জনের নামও প্রকাশ করেছে বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এর বিনিময়ে একই দিন নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৩ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস। এ ৩ জনের নাম ইতোমধ্যে ইসরায়েলের সরকারের কাছে পাঠিয়েছে গোষ্ঠীটি।
শুক্রবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। প্রসঙ্গত, চুক্তির শর্ত অনুসারে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের স্থায়ীত্ব হবে অন্তত ৪২ দিন, তবে প্রয়োজনে এই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিরতির যে চুক্তিটির অনুমোদন দিয়েছে হামাস এবং ইসরায়েল— সেটি তিন পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে যে ৩৩ জনকে মুক্তি দেবে হামাস, তাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, যে ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেবে, তাদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি আছেন ২৯০ জন এবং অন্যান্য অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন ১ হাজার ৬৮৭ জন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
চুক্তির শর্ত অনুসারে, আগামী ৬ সপ্তাহে সাত দফায় মুক্তি দেওয়া হবে এই ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি এবং ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস ও তার মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা। সেই হামলায় নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন সামরিক ও বেসামারিক ইসরায়েলি। এর পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।
এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকে গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েল, যা এখনো চলছে। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা অগণিত। এ ছাড়া হামলায় গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার ১৯ লাখই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা এ উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।
হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে বর্তমানে ৬০ জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংক্রান্ত অ্যাডভোকেসি সংস্থা প্যালেস্টাইনিয়ান কমিশন অব ডিটেইনি’জ অ্যাফেয়ার্সের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বর্তমানে বন্দি আছেন বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাগারে দণ্ডিত অন্তত ৬০০ জন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)