সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১
ভারতের কেরালার কোচিতে গত ১৫ জানুয়ারি ২৬ তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে মিহির আহমেদ নামে ১৫ বছর বয়সী এক ছাত্র। তার মা জানিয়েছে, স্কুলে বুলিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছে মিহির।
ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে মিহিরের মা রাজনা জানিয়েছেন, তার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে, মৌখিকভাবে অপদস্থ করা হয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো তাকে টয়লেটের সিট লেহন করতে বাধ্য করা হয়েছে।
পুলিশ মিহিরের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার মামলা করেছে। কিন্তু তার মা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও কেরালার পুলিশ প্রধানের কাছে তাৎক্ষণিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।
মিহির যেসব অত্যাচারের শিকার হয়েছে সেটি বর্ণনা দিয়ে তার মা ইনস্টাগ্রামে লিখেছে, “তার মৃত্যুর পর, আমি এবং আমার স্বামী তথ্য যোগাড় করা শুরু করি— কেন মিহির এই পথ বেঁছে নিল। আমরা সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন মেসেজ দেখতে পাই। এসব ঘেটে খুঁজে পাই কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে মিহির। সে র্যাগিং, বুলিংয়ের শিকার হয়েছিল। এছাড়া অন্য ছাত্রদের একটি গ্যাং তাকে স্কুলে এবং স্কুল বাসে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছে।”
তিনি আরও লিখেছেন, “যেসব তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি, এতে ভয়ানক চিত্র খুঁজে পেয়েছি। মিহিরকে মারধর করা হয়েছে, মৌখিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এমনকি জীবনের শেষদিনও সে অভাবনীয় নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে গেছে। তাকে জোর করে ওয়াশরুমে নেওয়া হয়। এরপর টয়লেটের সিট লেহন করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া টয়লেটের ভেতর তার মাথা চেপে ধরে সেটি ফ্ল্যাশ করা হয়। এসব নিষ্ঠুরতা তাকে ভেঙেচুরে দেয়। যা আমরা ধারনা করতে পারিনি।”
মিহিরের মা জানিয়েছে, শরীরের রঙ কালো হওয়ায় তাকে নির্যাতন করা হতো। এমনকি মৃত্যুর পরও নির্যাতনকারী ছাত্রদের নিষ্ঠুরতা বন্ধ হয়নি। একটি স্ক্রিনশটে তিনি খুঁজে পেয়েছেন যেখানে আরেকজন লিখেছে, ‘নিগাটি সত্যিই মারা গেছে’। তারা তার মৃত্যু নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে।
এদিকে এ মা দাবি করেছেন, তার ছেলের মৃত্যুর পর অন্য সহপাঠীরা বিচারের দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে একটি পেজ খুলেছিল। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ সেটি ডিলিট করতে ছাত্রদের বাধ্য করেছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)