বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২


কাশ্মিরের মিনি-সুইজারল্যান্ড খ্যাত বৈসরন ভ্যালিতে হামলা করল কারা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত:২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:১২

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগাম অঞ্চলের জনপ্রিয় একটি পর্যটন স্পটে বন্দুকধারীদের গুলিতে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত ও আরও ১৭ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবারের এই হত্যাকাণ্ডের পর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী হামলাকারীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে।

কাশ্মিরে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ৫ লাখের বেশি সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে পর্যটকদের ওপর বিরল এই হামলার ঘটনা ভারতের পাশাপাশি বিশ্ব পরিমণ্ডলেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কীভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটলো এবং ভারত কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

কোথায় হামলা হলো?

হিমালয় অঞ্চল লাগোয়া কাশ্মিরের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট বৈসরন উপত্যকায় এই হামলা হয়েছে। বৈসরন উপত্যকা ঘিরে থাকা পাইন বনাঞ্চল ও এর নৈস্বর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্যের কারণে মিনি-সুইজারল্যান্ড হিসাবেও পরিচিত এই পর্যটন স্পট।

কাশ্মিরে বসন্তের মৌসুমে পর্যটকদের ব্যাপক ঢল থাকে, ঠিক সেই সময়ে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, হামলাকারীদের গুলি চালানোর সময়ও ওই অঞ্চলে প্রায় এক হাজার পর্যটক ছিলেন।

ভুক্তভোগী কারা?

বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলায় মোট ২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সকলেই পুরুষ। আর এই পুরুষদের একজন নেপালের নাগরিক। বাকিরা ভারতীয়। এই ভারতীয়রা দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাশ্মিরে ঘুরতে গিয়েছিলেন।

হামলা চালাল কারা?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বৈসরন উপত্যকায় হামলা দায় স্বীকার করেছে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বল্প পরিচিত একটি গোষ্ঠী। কাশ্মির রেজিস্ট্যান্স নামের এই গোষ্ঠীটি ‘‘বহিরাগতদের’’ ওই অঞ্চলে বসতি স্থাপনের ঘটনায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। গোষ্ঠীটি বলেছে, বহিরাগতদের বসতি স্থাপনের কারণে উপত্যকার জনসংখ্যা কাঠামোতে পরিবর্তন ঘটছে।

ভারতীয় একাধিক নিরাপত্তা সংস্থা বলছে, এই গোষ্ঠীটি পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিদের একটি ফ্রন্ট। এর আগে কাশ্মিরে ইসলামপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাকিস্তান সহায়তা করছে বলে ভারতের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে ইসলামাবাদ বলেছে, তারা কেবল কাশ্মিরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি নৈতিক ও কূটনৈতিক সহায়তা প্রদান করছে।

কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

হামলার পরপরই বন্দুকধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে শত শত নিরাপত্তা কর্মীকে বৈসরন উপত্যকায় মোতায়েন করা হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন। তিনি এই হামলার পেছনে থাকা হোতাদের ‘‘ছাড় দেওয়া হবে না’’ বলে হুঙ্কার দিয়েছেন। দেশে ফিরে তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা-সহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

সেখানকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বর্তমানে কাশ্মিরে রয়েছেন। তিনি বুধবার সকালে হামলার স্থান পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করেছেন।

পর্যটকদের প্রতিক্রিয়া কী?

নৃশংস ওই হামলার পর পর্যটকরা কাশ্মির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানকার বিমান সংস্থাগুলো পর্যটকদের ভ্রমণের সুবিধায় অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে।

ভারতের ফ্লাইট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, পর্যটকরা বাড়িতে ফিরে যেতে চাচ্ছেন, এমন অপ্রত্যাশিত চাহিদা তৈরি হয়েছে। এয়ারলাইন্স সংস্থাগুলোকে ফ্লাইট বাতিলে এবং পুনঃনির্ধারিত ফি মওকুফ করার বিষয়ে বিবেচনার অনুরোধ করা হয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:১২ ভোর
যোহর ১১:৫৭ দুপুর
আছর ০৪:৩১ বিকেল
মাগরিব ০৬:২৭ সন্ধ্যা
এশা ০৭:৪৩ রাত

বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫