শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বিতর্কিত জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ করেছে ভারত। তিন বছর ধরে নির্মাণের পর সোমবার মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অযোধ্যায় মহা ধুমধাম করে রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় রামলালার (শিশু রামচন্দ্র)। খবর এনডিটিভির
রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বিশাল আয়োজন করে ভারত। রামজন্মভূমি ট্রাস্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রায় আট হাজার অতিথির উপস্থিতিতে, আলো ঝলমলে সুসজ্জিত অযোধ্যায় এই মহোৎসব পালিত হয়। এ সময় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা।
বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ এবং কমান্ডোবাহিনী তো আছেই, এ ছাড়া প্রতিটি উঁচু বাড়ির মাথায় বিশেষ রাইফেল নিয়ে পাহারা দেন স্নাইপাররা। আকাশে উড়ে অত্যাধুনিক নজরদারি ড্রোন। বসানো হয় ১০ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবেলায়ও প্রস্তুত রাখা হয় প্রশিক্ষিত বাহিনী।
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের সময় পুষ্পবৃষ্টি করা হয় আকাশ থেকে। হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছড়িয়ে দেওয়া হয় অযোধ্যার ওপর। অনুষ্ঠান শুরুর পর নরেন্দ্র মোদি হাতে পুজার ডালা নিয়ে ধীরে ধীরে মন্দিরের ভেতর এগিয়ে যান। রামমন্দিরের ভেতরের রামলালার বিগ্রহের চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। এই সময়েই দেশের বিভিন্ন মঠ-মন্দির থেকে আমন্ত্রিত ১২১ আচার্য ও পূজারির মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় রামলালার প্রাণ। সেখানে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ছিলেন যোগী আদিত্যনাথ এবং মোহন ভাগবত। হাতে পদ্মফুল নিয়ে পূজা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এনডিটিভি বলেছে, আরএসএস ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদর্শিক পরামর্শদাতা। অনুষ্ঠানে মোদি ও ভাগবত পরস্পর পাশাপাশি বসে থাকার মধ্যেম (যা গণমাধ্যমে সরাসরি প্রদর্শিত হয়েছে) রাম মন্দির বিজেপি-আরএসএসের যৌথ প্রকল্প বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এক সময় এই স্থানটিতে ছিল ১৬ শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদ। ১৯৯২ সালে কট্টরপন্থি হিন্দু জনতা মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার পর সৃষ্ট দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল। রাম যেখানে জন্মেছিলেন ঠিক সেই জায়গায় হিন্দু এই দেবতারা একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপরে মুসলিম আক্রমণকারীরা মসজিটটি নির্মাণ করেছিল বলে দাবি তাদের।
রয়টার্স জানিয়েছে, এই মন্দির নির্মাণ মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি। ৩৫ বছরের পুরনো এই বিতর্কিত রাজনৈতিক ইস্যুতে ভর করেই বিজেপি প্রাধান্য বিস্তার করেছে ও ক্ষমতায় এসেছে।
ইন্ডিয়া জোটের শরিক বিরোধী দলগুলো এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে না। কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীও রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যাননি। রাহুল গান্ধী এখন উত্তর-পূর্বে ন্যায় যাত্রা করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় পাল্টা সংহতি মিছিল করছেন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)