শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২
ফাইল ছবি
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিস্থল ধসে পড়েছে। এতে সেখানে বহু মানুষ আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি শুক্রবার (১৫ আগস্ট) এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকায় সম্রাট হুমায়ুনের সমাধির একটি অংশ ধসে পড়ে। ওই সময় সেখানে অন্তত ১০ জন আটকা পড়েন। ধসের ঘটনার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দেওয়া হয়। এখন সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছে।
সম্রাট হুমায়ুন
হুমায়ুন ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট। তাঁর পুরো নাম ছিল নাসির-উদ-দিন মুহাম্মদ হুমায়ুন। তিনি তার বাবা বাবরের মৃত্যুর পর ১৫৩০ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তাঁর রাজত্বকালে তিনি শের শাহ সুরির কাছে পরাজিত হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাসনে ছিলেন। পরে পারস্যের শাহের সহায়তায় তিনি নিজের সাম্রাজ্য ফিরে পেয়েছিলেন। কিন্তু এর মাত্র এক বছর পর তার মৃত্যু হয়।
হুমায়ুনের সমাধি দিল্লির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। এটি মুঘল স্থাপত্যের একটি অসাধারণ উদাহরণ এবং ভারতের প্রথম বাগান-সমাধি হিসেবে পরিচিত। এর নির্মাণ কাজ ১৫৬৫ সালে সম্রাট হুমায়ুনের প্রথম স্ত্রী বেগা বেগম (হাজি বেগম নামেও পরিচিত) শুরু করেন এবং এর স্থপতি ছিলেন পারস্যের মীরক মির্জা গিয়াস।
এই সমাধিটি মূলত লাল বেলেপাথর এবং সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি, আর এর স্থাপত্যে পারস্যের 'চারবাগ' (চার ভাগে বিভক্ত বাগান) এবং ভারতীয় শিল্পকলার এক চমৎকার সংমিশ্রণ দেখা যায়। এই সমাধির নকশা ও নির্মাণশৈলী পরবর্তীকালে বহু মুঘল স্থাপত্যকে প্রভাবিত করেছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো আগ্রার বিশ্ববিখ্যাত তাজমহল, যা প্রায় এক শতাব্দী পরে নির্মিত হয়েছিল।
এটি কেবল হুমায়ুনের সমাধি নয়, এখানে মুঘল রাজবংশের প্রায় ১৫০ জনেরও বেশি সদস্যের কবর রয়েছে, তাই একে 'মুঘল রাজবংশের নেক্রোপলিস' (সমাধিক্ষেত্র) বলা হয়। এর অসাধারণ ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক গুরুত্বের কারণে এটি ১৯৯৩ সাল থেকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের মর্যাদা লাভ করেছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)