মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
হামাস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা গাজার জন্য একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। প্রস্তাবটির মধ্যে রয়েছে প্রায় ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেকের মুক্তি, যা যুদ্ধের ধাপে ধাপে সমাধানের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
এই প্রস্তাবটি হামাস এবং মিশর ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে কায়রোতে কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনার পর এসেছে। একই সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেশে সর্ববৃহৎ বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন, যেখানে জনগণ জিম্মিদের মুক্তির জন্য দ্রুত চুক্তির দাবি করছেন।
নেতানিয়াহু এই বিক্ষোভের সমালোচনা করে বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা আলোচনায় হামাসের অবস্থানকে শক্তিশালী করছে। বিক্ষোভের আয়োজকরা রোববার নতুন বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।
মিশরীয় সূত্র জানিয়েছে, হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে গাজায় ৬০ দিনের জন্য সামরিক অভিযান স্থগিত করার কথা বলেছে। এই সময়ে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মির অর্ধেকের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। এই প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাতের সমাধানের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মিশর ইতিমধ্যেই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করছে। তবে ইসরায়েল গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য নতুন সামরিক আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে, যা প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে।
প্রস্তাবটি সোমবার (১৮ আগস্ট) ইসরায়েলের কাছে উপস্থাপন করা হবে, যদিও নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইসরায়েল অংশীভূত চুক্তিতে আগ্রহী নয়। হামাস যদি সব জিম্মিকে একসাথে মুক্তি দেয় এবং গাজার অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নেয়; তবেই যুদ্ধ শেষের জন্য সম্মত হবে।’
সাম্প্রতিক আলোচনার পরেও ইসরায়েলে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন, নতুন আক্রমণের সময় অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। এই সতর্কবার্তা দেশজুড়ে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণ ও বোমাবর্ষণে শহরের পূর্বাঞ্চল থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পশ্চিম ও দক্ষিণের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের ওপর তীব্র চাপ তৈরি হয়েছে।
জিম্মি ও নিখোঁজ পরিবার ফোরাম নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, ‘তাদের ২২ মাস ধরে গাজায় অসহায় অবস্থায় রাখা হয়েছে।’
ইসরায়েলের বিরোধী দলও নেতানিয়াহুর নীতি কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, তিনি পূর্বেও হামাসকে শক্তিশালী করেছিলেন এবং বর্তমানে একই নীতি অব্যাহত রেখেছেন। রাজনৈতিক চাপ ও জনগণের ক্ষোভের মধ্যে ইসরায়েলের আসন্ন স্থল আক্রমণের হুমকি এবং জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনার সৃষ্টি করছে।
সূত্র/গার্ডিয়ান
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)