শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভারি বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের গ্রামগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৩১৫ জন নিহত এবং এক হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রবিবার জানিয়েছে।
গ্রামবাসী নিহতদের দেহ সমাধিস্থ করছে এবং সাহায্য সংস্থাগুলো বিপর্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে। তালেবান চালিত শরণার্থী মন্ত্রণালয় বলেছে, ইতিমধ্যে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গবাদি পশু নিশ্চিহ্ন হয়েছে।
অন্যদিকে সহায়তা গোষ্ঠীগুলো স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং পানি সরবরাহের মতো অত্যাবশ্যক অবকাঠামোর ক্ষতির বিষয়ে সতর্ক করেছে। রাস্তাগুলো কাদায় ঢেকে আছে।
বাঘলান প্রদেশের নাহরিন জেলার বাসিন্দারা মৃতদেহগুলো একটি কবরস্থানে নিয়ে যায়। পরিবারের ১৩ সদস্যকে হারানো মুহাম্মদ ইয়াহকুব বলেন, ‘আমাদের খাবার নেই, পানি নেই, আশ্রয় নেই, কম্বল নেই, কিছুই নেই, বন্যা সব কিছু ধ্বংস করেছে।
৪২টি বাড়ির মধ্যে মাত্র দুটি বা তিনটি অবশিষ্ট রয়েছে, এটি পুরো উপত্যকাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
এক বিবৃতিতে তালেবানের অর্থনীতি মন্ত্রী দিন মোহাম্মদ হানিফ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ, মানবিক সংস্থা এবং বেসরকারি ব্যবসাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সেভ দ্য চিলড্রেনের আফগানিস্তানের পরিচালক আরশাদ মালিক বলেন, ‘জীবন ও জীবিকা ভেসে গেছে। আকস্মিক বন্যা গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে, ঘরবাড়ি ভেসে গেছে এবং গবাদিপশু মারা গেছে।
’ তিনি অনুমান করেছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলোতে তিন লাখ ১০ হাজার শিশু বাস করত। তিনি বলেন, ‘শিশুরা সব কিছু হারিয়েছে।’
শরণার্থী মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেছে, হতাহতের সর্বশেষ সংখ্যাটি তাদের বাঘলান প্রাদেশিক কার্যালয় থেকে এসেছে। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবারের বন্যায় ১৫৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়ে সে সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিল।
২০২১ সালে বিদেশি বাহিনী প্রত্যাহার করার সঙ্গে সঙ্গে তালেবানরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে দেশটি একটি সাহায্যের ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।
পরবর্তী বছরগুলোতে এ পরিস্তিতি আরো খারাপ হয়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে বিদেশি সরকারগুলোর বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক সংকটের মুখোমুখি হওয়া এবং সহায়তা সংস্থায় আফগান নারীদের কাজে তালেবানের নিষেধাজ্ঞা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)