শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। এতে করে দৃশ্যমানতা শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছে। এমনকি কয়েক হাত দূরের জিনিসও ঠিক ভাবে দেখা যাচ্ছে না। একইসঙ্গে কনকনে ঠান্ডা এবং শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতিও চলছে সেখানে।
এতে করে ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সড়ক ও রেলপথে চলাচল। আর ঘন কুয়াশার জেরে শতাধিক ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সকালে উত্তর ভারত ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ার পরে দিল্লি বিমানবন্দরে ১১০ টিরও বেশি ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়েছে। সেখানে দৃশ্যমানতা মাত্র ৫০ মিটারে নেমে গেছে। এর ফলে সড়ক পথে যানবাহনের চলাচল ও রেল পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।
এদিকে শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় ভারতের আবহাওয়া অফিস দেশটির জাতীয় রাজধানীতে ‘খুব ঘন কুয়াশা’ পড়ার বিষয়ে লাল সতর্কতা জারি করেছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিগামী ২৫টির মতো ট্রেন বিলম্বিত হয়েছে বলে দেশটির নর্দার্ন রেলওয়ে জানিয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, রাস্তাগুলো কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় উত্তরপ্রদেশজুড়ে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। আগ্রা-লখনৌ এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক যানবাহনের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে বরেলিতে বরেলি-সুলতানপুর মহাসড়কের কাছে একটি দ্রুতগামী ট্রাক রাস্তার পাশে একটি বাড়িতে ধাক্কা দিয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে ‘ঘন থেকে খুব ঘন কুয়াশা’ পড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।
দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে পালাম মানমন্দিরে দৃশ্যমানতার মাত্রা ১২৫ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আর সাফদরজং মানমন্দিরে দৃশ্যমানতা নেমে এসেছে মাত্র ৫০ মিটারে।
এছাড়া যাত্রীরা ভারতের জাতীয় এই রাজধানীর বেশ কয়েকটি অংশে আরও কম দৃশ্যমানতার কথা জানিয়েছেন। দিল্লি ছাড়াও, বেশ কয়েকটি উত্তর ভারতীয় শহর কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় বুধবার জেগে ওঠে। সেসব স্থানে যা দৃশ্যমানতাও হ্রাস পেয়েছে।
পাতিয়ালা, লখনৌ এবং প্রয়াগরাজে দৃশ্যমানতা ২৫ মিটারে নেমে এসেছে বলে রেকর্ড করা হয়েছে। আর পাঞ্জাবের অমৃতসর শহরে দৃশ্যমানতা ০ মিটারে নেমে গেছে। দিল্লিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, বুধবার দিল্লি বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ মিলিয়ে মোট ১১৫টি বিমানের ওঠানামায় বিলম্ব হয়েছে। প্রভাব পড়েছে দূরপাল্লার ট্রেনগুলোর ওপরও। কুয়াশার কারণে দিল্লি থেকে ২৫টি দূরপাল্লার ট্রেনও দেরিতে ছেড়েছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, বুধবার দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিল্লির পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান এবং উত্তরাখণ্ডের বেশ কিছু এলাকায়।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, রাজধানী ঘন থেকে অতি ঘন কুয়াশায় ছেয়ে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে কুয়াশার আস্তরণ সরে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে সকালের দিকে কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকায় সড়কপথে গাড়ি যাতায়াতের ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে।
গৃহহীন মানুষদের ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করতে দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয়স্থলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোতে কুয়াশার দাপট থাকতে পারে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)