শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ভয়াবহ খরায় খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ নামিবিয়ায় ৮৩টি হাতিসহ শত শত প্রাণীর মাংস জনগণের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকূলের খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় হাতি-সহ প্রায় ৭২৩টি বন্যপ্রাণী জবাই করে মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করা হবে।
সোমবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশের এমন সব পার্ক ও এলাকায় প্রাণী জবাই করে মাংস বিতরণ করা হবে; যেখানে প্রাণীর সংখ্যা চারণভূমি ও জল সরবরাহের তুলনায় বেশি।
গত কয়েক দশকের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখোমুখি হয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চল। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, নামিবিয়ার মজুদ করা খাদ্যের প্রায় ৮৪ শতাংশই গত মাসে শেষ হয়েছে। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক আগামী মাসগুলোতে উচ্চমাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নামিবিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, স্মরণকালের ভয়াবহ এই খরায় কর্তৃপক্ষ হস্তক্ষেপ না করলে মানব-বন্যপ্রাণী সংঘাত বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এই হুমকির কথা বিবেচনা করে শনাক্ত করা সম্ভাব্য সংঘাতপূর্ণ এলাকা থেকে ৮৩টি হাতি জবাই করা হবে এবং এসব প্রাণীর মাংস খরা ত্রাণ কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি দেশটির কর্তৃপক্ষ ৩০টি জলহস্তী, ৬০টি মহিষ, ৫০টি হরিণ, ১০০টি নীল বন্যশুকর, ৩০০টি জেব্রা এবং ১০০টি ইল্যান্ড জবাইয়ের পরিকল্পনা করেছে। সরকারের চুক্তি অনুযায়ী পেশাদার পশু শিকারি ও কোম্পানির মাধ্যমে ইতোমধ্যে ১৫৭টি প্রাণী শিকার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি। এসব প্রাণী জবাইয়ে ৫৬ হাজার ৮০০ কেজির বেশি মাংস পাওয়া গেছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, সরকারের এই পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে এবং আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার সাথে এটি সঙ্গতিপূর্ণ। সংবিধানে নাগরিকদের সুবিধার জন্য দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের বিধান রয়েছে।
আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ দেশ—জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, বতসোয়ানা, অ্যাঙ্গোলা এবং নামিবিয়ার সংরক্ষিত এলাকায় ২ লাখের বেশি হাতির বসবাস রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এর ফলে বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হাতির উপস্থিতি রয়েছে ওই অঞ্চলটিতে।
সূত্র: রয়টার্স।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)