বৃহঃস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চালানো হামলায় ইরানের অন্তত দুই সৈন্য নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলে ইরানের হামলার এক মাস যেতে না যেতেই শনিবার রাতে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইরান-ইসরায়েলের এই হামলা-পাল্টা হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে পুরোমাত্রার যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কারখানা, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থাপনা এবং বিভিন্ন অঞ্চলের সামরিক স্থাপনায় প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার প্রতিক্রিয়া দেখালে ইরানকে সেজন্য চড়া মূল্য গুণতে হবে বলে ইরানকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে ইসরায়েল
রাজধানী তেহরান ও অন্য দুই প্রদেশে সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামরার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরান। তেহরান বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরে দেশটির সামরিক বাহিনী ইসরায়েলি হামলায় দুই সৈন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে।
এর আগে, গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলের তেল আবিব-সহ একাধিক শহরে দুই শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। ওই হামলার প্রতিশোধে ইরানে হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিল ইসরায়েল। ইরানি হামলায় সেই সময় ইসরায়েলে একজনের প্রাণহানি ঘটে।
শনিবার ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলার নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া এবং তেহরানের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র হামাস ও হিজবুল্লাহ। এর ফলে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের পাশাপাশি গত মাস থেকে লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়েছে ইসরায়েল। জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইরান-ইসরায়েলের সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে ‘‘অন্ধকারাচ্ছন্ন দ্বন্দ্বের মুহূর্ত’’ উন্মোচিত করেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘ইসরায়েলের বিমান বাহিনী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হেনেছে; গত বছর ইসরায়েলে ইরান যেসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, তা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছিল এসব কেন্দ্র।
গত এপ্রিলের পর থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি দু’বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তেহরানের মিত্র লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সীমান্তে হামলা চালিয়ে আসছে।
হিজবুল্লাহ এবং হামাসের পাশাপাশি ইয়েমেন, ইরাক ও সিরিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও গাজা যুদ্ধের জেরে ইসরায়েলে হামলা করছে। ইরানে ইসরায়েলে হামলার পাশাপাশি প্রায় একই সময়ে সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা বলেছে, মধ্য ও দক্ষিণ সিরিয়ায় সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী হামলা চালিয়েছে।
ইরানপন্থী ইরাকের মিলিশিয়া গোষ্ঠী ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স শনিবার ভোরের দিকে উত্তর ইসরায়েলে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। ইরানে ইসরায়েলি হামলা শেষ হওয়ার পরপরই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, লেবানন থেকে ছোড়া দুটি ড্রোনকে ইসরায়েলে প্রবেশে বাধা পেয়েছে। এর আগে, শুক্রবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেটের আঘাতে দু’জন নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সূত্র: এএফপি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)