বৃহঃস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১


রোজা রাখলে শরীরে কী ঘটে, জানলে অবাক হবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত:৬ মার্চ ২০২৫, ১৬:০৯

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মুসলিম রোজা রাখেন। সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকেন। তবে রমজান কেবল মন নয় প্রভাব ফেলে শরীরেও।

এক মাস রোজা রাখলে শরীরে কী প্রভাব পড়ে, চলুন জানা যাক-

সবচেয়ে কষ্টকর প্রথম কয়েকদিন

শেষবার খাবার খাওয়ার পর আট ঘণ্টা পর্যন্ত মানুষের শরীরে সেই অর্থে উপোস বা রোজার প্রভাব পড়ে না। আমরা যে খাবার খাই, পাকস্থলীতে তা পুরোপুরি হজম হতে এবং এর পুষ্টি শোষণ করতে অন্তত আট ঘণ্টা সময় নেয় শরীর।

যখন এই খাদ্য পুরোপুরি হজম হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীর যকৃৎ ও মাংসপেশিতে সঞ্চিত যে গ্লুকোজ থাকে, সেটা থেকে শক্তি নেয়ার চেষ্টা করে। শরীর যখন এই চর্বি খরচ করতে শুরু করে, তা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। তবে রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ায় কিছুটা দুর্বল এবং ঝিমুনির ভাব আসতে পারে। এছাড়া কারো কারো ক্ষেত্রে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। এ সময়টাতেই আসলে শরীরে সবচেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগে।

৩য় থেকে ৭ম রোজায় পানিশূন্যতা থেকে সাবধান

প্রথম কয়েকদিন পার হলে শরীর যখন রোজায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে, তখন শরীরে চর্বি গলে গিয়ে তা রক্তের শর্করায় পরিণত হয়। কিন্তু রোজার সময় দিনের বেলায় যেহেতু কিছুই খেতে বা পান করতে পারছেন না, তাই রোজা ভাঙ্গার পর অবশ্যই আপনাকে সেই ঘাটতি পূরণের জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। নয়ত মারাত্মক পানি-শূন্যতায় আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষ করে গরমের দিনে যদি শরীরে ঘাম হয়।

এছাড়া যে খাবার খাবেন তাও যথেষ্ট শক্তিদায়ক হতে হবে। যেমন কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং চর্বি। একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে সব ধরণের পুষ্টি, প্রোটিন বা আমিষ, লবণ এবং পানি থাকবে।

৮ থেকে ১৫ রোজায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে শরীর

এই পর্যায়ে এসে শরীর-মন ভালো লাগে। কারণ রোজার সঙ্গে শরীর ততদিনে মানিয়ে নিতে শুরু করে। ক্যামব্রিজের এডেনব্রুকস হাসপাতালের 'অ্যানেসথেসিয়া এন্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিনের' কনসালট্যান্ট ড. রাজিন মাহরুফ রোজার সুফল ব্যক্ত করে বলেন, ‘সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই। ফলে শরীর অন্য অনেক কাজ ঠিকমত করতে পারে না। কিন্তু রোজার সময় যেহেতু উপোস থাকায় শরীর অন্যান্য কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। কাজেই রোজা কিন্তু শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এটি শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলা বা সংক্রমণ রোধে সাহায্য করতে পারে।’

ভারমুক্ত শরীর মিলবে ১৬ থেকে ৩০ রোজায়

রমজান মাসের দ্বিতীয়ার্ধে শরীর কিন্তু পুরোপুরি রোজার সঙ্গে মানিয়ে নেবে। শরীরের পাচকতন্ত্র, যকৃৎ, কিডনি এবং দেহত্বক এসময় এক ধরণের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাবে। সেখানে থেকে সব দূষিত বস্তু বেরিয়ে শরীর শুদ্ধ হয়ে উঠবে। এসময় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পাবে। স্মৃতি ও মনোযোগের উন্নতি হবে এবং শরীরে অনেক শক্তি পাবেন’— বলছেন ড. মাহরুফ।

রোজা রাখা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

রোজা রাখা শরীরের জন্য ভালো, কারণ আমরা কী খাই এবং কখন খাই সেটার ওপর আমাদের মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। একমাসের রোজা রাখা হয়তো ভালো। কিন্তু কাউকে একটানা রোজা রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাবে না। শরীরের ওজন কমানোর জন্য একটানা রোজা রাখা কোনো স্বাস্থ্যকর উপায় নয়। কারণ একটা সময় শরীর চর্বি গলিয়ে তা শক্তিতে পরিণত করার কাজ বন্ধ করে দেবে। তখন এটি শক্তির জন্য নির্ভর করবে মাংসপেশির ওপর। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

রমজান মাসের পর মাঝে মধ্যে অন্য ধরণের উপোস করা যেতে পারে। যেমন ৫:২ ডায়েট (পাঁচদিন কম খেয়ে দুদিন ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করা)। যেখানে কয়েকদিন রোজা রেখে আবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাওয়া-দাওয়া করা যেতে পারে।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৫:০১ ভোর
যোহর ১২:১০ দুপুর
আছর ০৪:২৫ বিকেল
মাগরিব ০৬:০৪ সন্ধ্যা
এশা ০৭:১৯ রাত

বৃহঃস্পতিবার ৬ মার্চ ২০২৫