মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
আপনার শরীরের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ডিম খান। কী পরিমাণে ডিম খেলে আপনার শরীরের চাহিদা পূরণ হবে, সে বিষয়ে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
একটি ডিম থেকে শক্তি মেলে ৭৮ ক্যালোরি। এতে প্রোটিন থাকে ৬.৩ ও ফ্যাট ৫.৩ গ্রাম। এছাড়া এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, ফসফরাস, সেলিনিয়ামসহ একাধিক খনিজ। তাই ডিমকে বলা যায় সস্তায় পাওয়া পুষ্টিকর খাদ্য।
তিনটি ডিমে ১৮-২১ গ্রামের মতো প্রোটিন মেলে। শরীরচর্চার পর কিংবা যাদের কায়িক শ্রম বেশি হয়, শুধু এটুকু প্রোটিন তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। তাদের শরীরের জন্য অন্য খাবারেরও প্রয়োজনীয়তা থাকে। তাই শুধু ডিম খেয়ে শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ সমর্থন করেন না পুষ্টিবিদরাও।
ডিমের ভেতরে থাকা ‘অ্যাভিডিন’ নামের গ্লাইকোপ্রোটিন শরীরের ভেতরে বায়োটিন শোষণে বাধা দেয়। আর বায়োটিন শরীরের খুব প্রয়োজনীয় উপাদান। চুল ভালো রাখতে ও ত্বক-নখের গঠনে সাহায্য করে এটি।
বরং পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, পেশাদার কারও সাহায্য নিয়ে দৈনন্দিন ডায়েট ঠিক করা দরকার। একই সঙ্গে তারা মনে করেন, ডিমের গুণাগুণ পেতে হলে সেটি সিদ্ধ করে খাওয়া দরকার। বেশি তেলে অমলেট করলে, স্বাদ বাড়বে ঠিকই, কিন্তু গুণ কমে যাবে।
এখন আপনি প্রতিদিন কটা করে ডিম খাবেন। একটি, দুটি, তিনটি— না কি তারচেয়েও বেশি? এমন অনেকেই আছেন, যারা দিনের শুরুটা ডিমের পোচ দিয়ে করেন, দুপুরেও ডিম খান, আবার রাতে গিয়েও ডিম। কেউ কেউ দেখা যায় ভাতে একসঙ্গে দুটি ডিম খান। তাই সারা দিনে তিনটি ডিম খাওয়া মোটেই অস্বাভাবিক বিষয় নয়।
এখন এই তিনটি ডিম খেলে কি হয় শরীরে? এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেছেন, পুষ্টিগুণের জন্যই ডিমের কদর। তার ওপর মাছ ও মাংসের তুলনায় দাম কম। সে কারণে প্রতিদিনই ডিম খাওয়া যায়।
তিনি বলেন, যারা দিনে ঘণ্টাখানেক সাঁতার কাটেন, জিমে যান, দিনভর যথেষ্ট দৌড়াদৌড়ি করেন, কসরত করে ঘাম ঝরান; তারা দিনে তিনটি ডিম খেতেই পারেন। শম্পা চক্রবর্তী বলেন, তবে একবারে না খেয়ে দিনের বিভিন্ন সময় একটা করে খাওয়াই ভালো। আবার যাদের এমন পরিশ্রম হয় না, তারা এক দিনে তিনটি ডিম খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে বলেও জানান এ পুষ্টিবিদ।
মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ প্রতীক্ষা কদম বলেছেন, ডিমে রয়েছে ৯ রকমের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা পেশি গঠনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এতে মেলে কোলাইন, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য খুবই জরুরি। এতে থাকা লিউটেইন দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো।
পুষ্টিবিদ কণিকা মালহোত্রা বলেছেন, এত পুষ্টিগুণ থাকায় একসঙ্গে তিনটি ডিম খাওয়া সবার জন্য ভালো নয়। কারণ একটি ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রামের কোলেস্টেরল মেলে। যাদের ওজন বেশি, হার্টের সমস্যা রয়েছে; তাদের জন্য দিনে তিনটি ডিম খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। আর উচ্চ কোলেস্টরেলের সমস্যা থাকলে এক দিন অন্তর একটি করে ডিম খাওয়া ভালো।
শিশু থেকে বয়স্ক— সবাই ডিম খেতে পারেন। বিশেষত বয়স্ক মানুষ, যারা মাংস খান না বা মাছ খেতে পছন্দ করেন না, তারা একটি ডিম খেলে শরীর অনেকটাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেন, এক বছরের কম বয়সি শিশুর ডিমের কুসুম দেওয়া যেতে পারে। সাদাটা খাওয়াতে বারণ করা হয়। কারণ ডিমের এ অংশটি থেকে শিশুদের অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকে। তবে এক বছরের পর থেকে ডিমের দুটো অংশই খাওয়ানো যেতে পারে। নিয়মিত একটি ডিম খাওয়াই যথেষ্ট। তবে শরীরচর্চা বেশি হলে দিনে দুটি খাওয়া যেতে পারে।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)