শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
কামরাঙা কাঁচা, পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। এই ফল দেখতে যতটা সুন্দর, তেমই নানা ধরনের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপকারী নানা উপাদান রয়েছে এই ফলে।
কী পরিমাণে কামরাঙা খাওয়া শরীরের জন্য ভালো
যাদের কিডনি সুস্থ, কামরাঙা খেলে তাদের কোনো ক্ষতি হয় না। দিনে ১ থেকে ২টা কামরাঙা খেলেও তেমন সমস্যা হবে না। তবে অত্যধিক পরিমাণে অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণে অনেক দিন কামরাঙা খেলে ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশেষ করে, কামরাঙা ফলের রস সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে।
সম্প্রতি ভারতীয় পুষ্টিবিদ শিখা শর্মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে আমরাঙার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তার মতে, কামরাঙায় রয়েছে আধুনিক জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বহু রোগের সমাধান।
উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
কামরাঙায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরকে দূষণমুক্ত করে সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি
কামরাঙায় থাকা এনজাইম এবং ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ভালো। এটি হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে।
হৃদ্রোগ এবং উচ্চ রক্তচাপে
কামরাঙায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য কামরাঙা উপকারী। এছাড়াও এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। দুটি উপাদানই হার্ট ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে
যদি ওজন কমানোর পরিকল্পনা থাকে, আর খাদ্যতালিকায় কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার রাখতে চান, তবে কামরাঙা রাখতে পারেন। প্রথমত, কামরাঙায় থাকা ফাইবার এবং পানি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। দ্বিতীয়ত, এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বিপাকের হার বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে, যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে জরুরি।
উজ্জ্বল ত্বক
কামরাঙায় রয়েছে ত্বকের বয়স ধরে রাখার ক্ষমতা। এর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করতে পারে। একইসঙ্গে বলিরেখা কমাতেও এটি সহায়ক। নিয়মিত এই ফল খেলে ত্বকে প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য আসে। রাস্তাঘাটের ধুলাবালি, দূষণ এবং রোদের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতেও পারে এই ফলে থাকা উপাদান।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
কামরাঙা ডায়াবেটিসের রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। কারণ এটি স্বাদে মিষ্টি হলেও এর গ্লাইসেমিক সূচক কম। ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা সহজে বাড়তে দেয় না। এতে ডায়াবিটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
লিভার পরিষ্কার
কামরাঙা লিভারের জন্যও উপকারী। কারণ এর শরীরকে দূষিত পদার্থ থেকে মুক্ত করার ক্ষমতা আছে। বাইরের তেল-মশলাযুক্ত খাবার থেকে শরীরে যে দূষিত পদার্থ জমে, এটি তার থেকেও লিভারকে মুক্ত করে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। তবে যদি লিভার বা কিডনির অসুস্থতা থাকে, তবে খাওয়ার আগে এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
হাইড্রেশনে সাহায্য করে
কামরাঙায় ৯০% পানি থাকায় এটি শরীরে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা যোগায়। বিশেষ করে শরীরচর্চার পরে এটি খাওয়া উপকারী। শরীর ঠাণ্ডা রাখতেও এই ফলের উপযোগিতার উল্লেখ আছে।
প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান
কামরাঙায় রয়েছে নানা ধরনের জরুরি পুষ্টিগুণ। এতে আছে ভিটামিন এ, বি, সি, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়ায়াম, আয়রন এবং ভরপুর পটাশিয়াম। সম্ভবত এই জন্যই এই ফলকে সুপারফুড বলছেন চিকিৎসক। হাড় এবং পেশির স্বাস্থ্যের জন্য এই প্রতিটি পুষ্টিগুণ অত্যন্ত উপকারী।
এই ফল কাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ?
যাদের আগে থেকেই কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে। শারীরিক স্থূলতা, কিডনিতে পাথর থাকার ইতিহাস, ডায়ালিসিসের রোগী, অন্তঃসত্ত্বা নারীর এই ফল না খাওয়াই উত্তম।
সূত্র: আনন্দবাজার
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)