শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
ব্যস্ততম জীবনে কাজের চাপে ঘুমের ঘাটতি থেকে যায়। আর পুরুষের তুলনায় নারীর ঘুম বেশি প্রয়োজন হয়। কেন নারীর ঘুম বেশি প্রয়োজন হয়, তা আমরা অনেকেই জানি না। কিন্তু একবার ভাবুন তো—নারীর সারাদিনের কর্মব্যস্ততার কথা। একজন নারীকে দিনভর সব কাজ ঠিকভাবে করে আট ঘণ্টা নির্বিঘ্ন ঘুম দিতে হয়। কারও তার চেয়ে সামান্য বেশি, কারও বা অল্প কম প্রয়োজন হয়। ঠিক যেভাবে শরীরের খাদ্য ও পানি প্রয়োজন, ঠিক তেমনই ঘুমেরও প্রয়োজন হয়।
কয়েক রাত না ঘুমালেই যে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, এমন নয়। কিন্তু মস্তিষ্ক একভাবে সচল নাও থাকতে পারে। কাজের সময়ে অনেক কিছুই গুলিয়ে যায়। মন দিয়ে কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে। সমস্যা হয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও। বিশেষ করে নারীর শুধু বাইরের কাজ নয়, বাড়ির বেশিরভাগ দায়িত্বও সামলাতে হয়। এ ক্ষেত্রে কর্মজীবী নারীর ওপর চাপ বেশি পড়ে যায়। এত কিছু একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের।
এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, পুরুষের চেয়ে নারীর ঘুমের প্রয়োজন বেশি। কারণ ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নারীর জন্য যথেষ্ট নয়। ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন’ বলছে— প্রায় ৪০ শতাংশ নারী অনিদ্রায় ভুগে থাকেন। প্রাথমিক কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, জৈবিক গঠন অনুসারে পুরুষ ও নারীর ঘুমের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে সামান্য পরিবর্তন থাকতে পারে। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ঘুম অনেক বেশি সজাগ। অর্থাৎ ছেলেদের মধ্যে গভীর ঘুমের প্রবণতা আছে, সেই তুলনায় মেয়েদের ঘুম পাতলা। ফলে সময় পেলেও নানা কারণে ঘুম ভেঙে যায়। অনেক নারীই যেহেতু ঘর ও বাইরে দুটোই সামলান, সে জন্য একটা মানসিক চাপ সবসময়ে কাজ করে তাদের মধ্যে। আর নিশ্চিন্তে ঘুমানোর সুযোগ কম থাকে। এ ছাড়া হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, ব্যক্তিগত জীবনযাপন এবং কর্মক্ষমতা বজায় রাখতেও নারীর ঘুমের প্রয়োজন বেশি।
এ ঘুমের ব্যাঘাত কিংবা অনিদ্রার সমস্যা যেভাবে দূর করবেন নারীরা, তা জানা প্রয়োজন। এতে নারীর অনেক উপকার হবে। জেনে নিন কীভাবে প্রতিদিন রাতে সময়মতো ঘুমাতে যাবেন।
প্রথমত টিভি, ল্যাপটপ কিংবা ফোন ব্যবহার করার সময় কমিয়ে আনতে হবে। এ ছাড়া ঘুমাতে যাওয়ার সময় অনেকেরই মাথায় হরেক রকমের দুশ্চিন্তা চলে আসে। আর এই দুশ্চিন্তাই অনিদ্রার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এ সমস্যাগুলো মাথার থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা করুন। এর সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে প্রতিদিন ঘুমানোর আগে দুশ্চিন্তার কথা লিখে রাখা। শুধু দুশ্চিন্তার কথা নয়, আগামী দিনে যা যা কাজ বাকি পড়ে আছে, তাও লিখে রাখতে পারেন। এতে অন্তত কিছু সময়ের জন্য মাথা হালকা হয়ে যেতে পারে।
দ্বিতীয় কী খাচ্ছেন তার সঙ্গেও ঘুমের যোগ রয়েছে। ক্যাফিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে বেশ কয়েক ঘণ্টা ঘুম আসে না। কফি ও চকোলেটে এ উপাদানটি বেশি থাকে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৬ ঘণ্টা আগেই থামিয়ে দিতে হবে এ ধরনের খাবার। পাশাপাশি রাতের খাবার যথাসম্ভব হালকা রাখাই ভালো। কারণ অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যায় ঘুম আসতে বিলম্ব হতে পারে।
আর বৈদ্যুতিক আলো থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখুন। কারণ আলোয় চোখ রাখলেই মস্তিস্ক সজাগ ও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে নিজেকে এ ধরনের আলো থেকে সরিয়ে নিন। যদি কিছু করতেই হয়, তবে একটু দূর থেকে মৃদু সংগীত বাজাতে পারেন। তবে হেডফোন কানে লাগিয়ে ঘুমাবেন না কোনোমতেই।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)