রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১


দুধ না দুগ্ধজাত খাবার ভালো?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত:১৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

দুধকে বলা হয় আদর্শ খাবার। এই খাবারটা কম-বেশি সবারই পছন্দ। শিশু হোক বা বয়স্ক, দুধ এমনই একটা খাবার যা সহজপাচ্য ও সহজলভ্য এবং গুণের দিক থেকে বহুমুখী। শুধু দুধ কেন, দুধের সমস্ত উপাদানই পুষ্টির সমাহার। যদিও সবার, সব কিছু ভালো লাগে না, স্বাদে ও গন্ধে দুধ অনেকের কাছেই বাদের খাতায়। তবুও সুষম ডায়েটের তালিকায় অন্যতম খাদ্য উপাদান।

কারও দুধ ভালো লাগবে, কারও ঘি-মাখন বা পনির-দই, এই বিষয়টি ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে। অন্যদিকে পুষ্টির বিচারেও প্রোডাক্ট অনুযায়ী পার্থক্য আছে। আপনি দুধ না খেতে চাইলে দই খেতে পারেন। আবার বাড়ির শিশু দুধ খেতে না চাইলেও ছানা বা ক্ষীর খাইয়ে দুধের বিকল্প পুষ্টি পৌঁছে দিতে পারেন। দুধ না দুগ্ধজাত খাবার কোনটা বেশি ভালো, জানা জরুরি। মুখের স্বাদ বদলানোর জন্য মাঝেমধ্যে দুধ দিয়েও আমরা কিছু বানিয়ে খেতে পারি। জেনে নিন কোনটা, কতটা খাবেন এবং কেন খাবেন।

ভালো কোনটি?

দুধ: এই সুষম খাদ্যে নয় রকম এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। এছাড়া প্রোটিন, স্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ভালো কার্বোহাইড্রেট যেমন-ল্যাকটোজ, গ্যালাকটোজ, ভিটামিন-এ, ডি, বি-১২ সমৃদ্ধ দুধ।

দই/ইয়োগার্ট: দই ক্যালশিয়াম, ভিটামিন এ, ডি, বি-১২ সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য, টাইপ টু ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলাস রোগের ক্ষেত্রেও খাওয়া যেতে পারে। ক্ষতিকারক টক্সিনের হাত থেকে বাঁচায়। এর মধ্যে উপস্থিত প্রোটিন উপাদানগুলো পেশির বৃদ্ধিতে এবং টিস্যু ঠিক রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কমায় ক্যানসারের ঝুঁকিও।

আরও পড়ুন : ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, জবাব দে’ স্লোগানে উত্তাল ঢাবি

ছানা/পনির: ক্যালশিয়াম এবং বায়ো অ্যাকটিভ পেপটাইড-এনজাইম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়াম কমিয়ে দেয় ক্যানসারের প্রবণতা, গর্ভবতীদের জন্যও খুব উপকারী। এর পাশাপাশি ছানার জলও বিশেষ পুষ্টিগুণে ভরা। রাইবোফ্ল্যাবিন নামক ভিটামিনটি শারীরিক বৃদ্ধিতে এবং শক্তির জোগানে গুরুত্বপূর্ণ। হার্টের সমস্যা, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, কিডনির সমস্যা, লো ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই আটা মাখার সময় কিংবা কোনও ডাল রান্না করার সময় এই পানি ব্যবহার করতে পারেন।

ঘি: অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন-এ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর এই খাবার। এটি অ্যান্টি-আর্থ্রাইটিস, গাঁটে ব্যথার সমস্যা দূর করে, চুলের স্বাস্থ্য ও ত্বক ভালো রাখে। বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে খান। নইলে বিপদ।

আরও পড়ুন : সরকারের বদনাম নিয়ে ভাবি না, দুর্নীতি করলেই ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

মাখন: এতে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং ক্যালশিয়াম, যা শরীর সুস্থ রাখে। ক্যালোরি শরীরে এনার্জির ঘাটতি পূরণ করে। চোখ, হাড় ও ত্বকের জন্য উপকারী। তবে বেশি পরিমাণে খাওয়া মোটেই ভালো না। অত্যাধিক স্যাচুরেটেড ফ্যাট ডেকে আনে হার্টের সমস্যা, ওজন বাড়ায়। কম পরিমাণে খান সুস্থ থাকবেন। মার্জারিনও খাবারের মধ্যে বুঝেশুনে রাখুন। এতে থাকে ট্রান্স ফ্যাট যা ভালো কোলেস্টেরল কমিয়ে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।

কিছু জিনিস ক্ষতিও করে

মিষ্টি, আইসক্রিম: এতে অত্যধিক পরিমাণে শর্করা ও ক্যালোরির উপস্থিতি শরীরের জন্য বেশি পরিমাণে মোটেই ভালো নয়। মাঝেমধ্যে কিছু দিন অন্তর অন্তর খেতে পারেন।

চিজ/মেয়োনিজ: স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকে। রোজ খাবার জন্য এগুলো একেবারেই উপযুক্ত নয়, তাই এড়িয়ে চলুন।

পায়েস: বাঙালিরা পায়েস খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু বেশি পরিমাণে খেলে হতে পারে হজমের সমস্যা। মাংস খাওয়ার পর খেলে গুরুপাক। এছাড়াও থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। তাই বুঝেশুনে খান।

ক্ষীর-দুধের সর: বেশি পরিমাণে খেলে দেখা যায় হজমের সমস্যা, ডায়েরিয়া, বমি বমি ভাব। শিশুদের ক্ষেত্রে দুধের সর হজম করা একটু কঠিন। তাই দুধ খাওয়ানোর আগে সর তুলে নিন। অন্যদিকে, ক্ষীরে শর্করার ভাগ বেশি থাকায় দেখা ওজন বাড়তে পারে, ডায়াবেটিস থাকলে এড়িয়ে চলুন।

গুঁড়া দুধ বা মিল্ক ক্রিম: মন চাইল অমনি রান্নাঘরে চুপি চুপি গিয়ে গুঁড়া দুধ খেয়ে নেন। স্বাদে অনবদ্য, ছোটবেলার এ নস্টালজিয়া বড় বয়সে মাঝেমধ্যেই ফিরে আসে। কিন্তু বুঝে, এই দুধে অত্যধিক পরিমাণে চিনির উপস্থিতি হার্ট, ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়ায়। নেই ক্যালশিয়ামও। মিল্ক ক্রিম আজকাল ডেজার্ট তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত। এতেও কিন্তু ফ্যাটের পরিমাণ খুব বেশি। কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়ায়।

কোনটা কতটা খাবেন?

শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা সঠিক পরিমাণে জোগান দিতে দুধের বিকল্প আর কিছু নেই। তবে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, অম্বলের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে সোয়ামিল্ক ও কিংবা দই খেতে পারেন। একই রকম উপকার পাবেন। ১ গ্লাস অর্থাৎ ২৫০ এমএল দুধে ৩২৫ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। শরীর গঠনের সময় ক্যালশিয়ামের চাহিদা বাড়ে। ৬ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত চাহিদা থাকে ১৩০০ মিলিগ্রাম। ১৮-৫০ বছর বয়স পর্যন্ত চাহিদা কমে দাঁড়ায় ১০০০ মিলিগ্রামে। আবার, ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে বিশেষ করে মেয়েদের মেনোপজের পর শরীরে ক্যালশিয়ামের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০০ মিলিগ্রামে। তাই যে কোনও বয়সেই সব সময় ডায়েটে উপযুক্ত ক্যালশিয়াম রাখুন।

১ গ্লাস দুধ, ১ বাটি টকদই (বাড়িতে পাতলে খুব উপকারী), ছানা/পনির (১০০-১৫০ গ্রাম) মিলিয়ে মিশিয়ে রাখুন। অল্প ঘি খেতে পারেন। বয়সকালে অস্ট্রিওস্পোরোসিস, অস্ট্রিওপেনিয়ার মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন। তবে মিষ্টি বা আইসক্রিম খেয়ে ক্যালশিয়ামের চাহিদা মিটবে এমনটা নয়।

সম্পর্কিত বিষয়:

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৪:২৫ ভোর
যোহর ১১:৫৭ দুপুর
আছর ০৪:২৫ বিকেল
মাগরিব ০৬:১৪ সন্ধ্যা
এশা ০৭:২৮ রাত

রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪