শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
রোজকার রান্নার একটি অতি পরিচিত উপাদান আলু। ভাজি থেকে শুরু করে ভুনা, ঝোল থেকে শুরু করে নাশতা— কোথায় এর উপস্থিতি নেই? মাছ-মাংস সবকিছুই রান্না করা যায় আলু দিয়ে। অর্থাৎ বাঙালি রান্নায় এর সরব উপস্থিতি।
যদি প্রশ্ন করা আলুর জন্ম কোথায়? হয়তো ভাববেন এ দেশেই। কিন্তু না। আলু মোটেও আমাদের দেশি সবজি নয়। এটি বিদেশি। কীভাবে এ দেশে আলু এলো চলুন জেনে নিই-
একসময় আলুর ব্যবহার জানত না এ দেশের মানুষ। কয়েকশো বছর আগেও ভারতবর্ষে আসেনি এই সবজিটি। ইতিহাস মতে, আলুর জন্ম দক্ষিণ আমেরিকার পেরু সংলগ্ন আন্দিজ পর্বতমালায়।
জানলে অবাক হবেন, একসময় আলুকে নিম্নশ্রেণির মানুষের খাবার মনে করা হতো। এজন্য স্পেনের উপনিবেশগুলোর সংশোধনাগার, হাসপাতালে রোগীদের আলুর তরকারি খাওয়ানো হতো। উচ্চবিত্তরাও আলু কিনতেন। তবে নিজের জন্য নয়। গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে।
মনে করা হয় ১৭০০ শতকের প্রথম দিকে ভারতীয় উপমহাদেশে পর্তুগিজ নাবিকরা প্রথম আলু নিয়ে আসে। যেহেতু এই সবজিটি সহজে পচে না তাই পর্তুগিজ নাবিকরা দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রায় আলু বোঝাই করে নিয়ে আসতো। সহজেই সেদ্ধ করা খাওয়া যায় এই সবজিটি আনা হতো। এভাবে বণিকদের মাধ্যমে ভারতবর্ষের মানুষ প্রথম আলুর বিষয়ে জানতে পারে।
কথিত রয়েছে, তৎকালীন কালিকট বন্দরের শ্রমিকদের অন্যতম খাবার হয়ে দাঁড়িয়েছিল আলু। পরবর্তীতে ওয়ারেন হেস্টিংসের আমলে আলুকে ভারতবর্ষের সর্বত্র ছড়াতে কাজ করেছিল ইংরেজরা। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ব্রিটিশদের উদ্যোগে ভারতীয় উপমহাদেশে আলুর চাষ শুরু হয়।
ভারতবর্ষে আলু চাষের পেছনেও রয়েছে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য। ব্রিটিশরা চেয়েছিল, কম খরচে ভারতে আলু চাষ করে ইউরোপে তা চড়া দামে বিক্রি করতে। এভাবেই সেসময় ভারতের পশ্চিম উপকূলের শহর মুম্বাই বা তৎকালীন বোম্বে-সহ অনেক প্রদেশে আলুর চাষ বাড়তে থাকে। কালের স্রোতে যা বাঙালিদের রোজকার খাবারে পরিণত হয়।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)