শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে রাস্তায় ট্রাকের চাপায় নিহত হয়েছেন ফায়ার ফাইটার সোয়ানুর জামান নয়ন। নয়নের মৃত্যুর পর নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন তখন পুলিশ কেন রাস্তা বন্ধ করে দেয়নি। পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটতো না। এর দায় কী স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এড়াতে পারেন—এমন প্রশ্নে নয়নের মৃত্যুর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ২০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরে ফায়ারফাইটার সোয়ানুর জামান নয়নের জানাজা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই ঘটনার বিচার অবশ্যই হবে। আমার একজন কর্মী মারা গেল এর ব্যর্থতা আমার। এ ঘটনায় আমি শোকাহত। অল্প বয়সে এই ছেলেটা চলে গেল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তো তার মা-বাবার। অন্য সবাই কিন্তু আস্তে আস্তে ভুলে যাবে কিন্তু তার মা-বাবা কিন্তু এই মৃত্যু ভুলতে পারবে না।
এর আগে বেলা ২টা ৫ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে নিহত ফায়ার ফাইটার সোয়ানুর জামান নয়নের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকসহ বাহিনীটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুন নেভানোর সময় ট্রাকচাপায় আহত হন নয়ন। তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের স্পেশাল এ ফাইটারকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সোয়ানুর জামান নয়ন (২৪) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান আটপড়িয়া গ্রামের কৃষক আখতারুজ্জামানের ছেলে। তিনি দুই বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মী সোয়ানুর জামান নয়নের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মধ্যে নয়ন ছিল ছোট। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা নার্গিস বেগম। সন্তানবিয়োগের ব্যথা সইতে না পেরে নিজের বুক চাপড়ে আহাজারি করছেন মা।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)