শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
টানা ১০ বছর মন্ত্রিপরিষদের সদস্য থাকার পর এবার মন্ত্রীর ডাক পাননি পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এই সংসদ সদস্যর শেষ কর্মদিবস আজ।
নতুন দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রিদের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন আব্দুল মান্নান। কথা বলার সময় গত ১৫ বছরের সরকার অর্জন, ভবিষ্যতে কোন কোন খাতে মেগা পরিকল্পনা প্রয়োজন তা নিয়ে নিজের ভাবনার কথা জানিয়েছেন।
পরিকল্পনা কমিশনের শেষ কর্মদিবসে আব্দুল মান্নান বলেন, বর্তমান সরকার গ্রামে মানুষের দিকে নজর দিয়েছে। তবে গ্রামমুখী নীতি আরও বাড়ানো দরকার।
বিদায় বেলায় কোনো আক্ষেপ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এনজয় করছি। আমার কোনো কষ্ট নেই। আমি মন্ত্রী না থাকলেও তো সংসদে আছি। সংসদ সরকারের ওপরে। আমি দলের একজন কর্মী। আমি শেখ হাসিনার একজন কর্মী। দল যেখানে কাজে লাগাবে সেখানে কাজ করব।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। গতকাল নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেন। এরপর নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন আগের মন্ত্রিসভার ১৪ মন্ত্রী, ১২ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুইজন উপমন্ত্রী। নতুন মুখ হিসেবে মন্ত্রিসভায় যুক্ত হচ্ছেন ১৪ জন। এর বাইরে কয়েকজনকে আবার নতুন দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। নতুন মন্ত্রিসভায় ১৪ জন হেভিওয়েট মন্ত্রী বাদ পড়েছেন। তাদের মধ্যে আব্দুল মান্নানও আছেন।
আজ রাতে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা শপথবাক্য পাঠ করবেন। রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন তাদের শপথবাক্য পড়াবেন।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বিদায়ী দিনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন আব্দুল মান্নান। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
নতুন মন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে আব্দুল মান্নান বলেন, নতুন যিনি এ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে আসবেন, তিনি দারুণ কর্মপরিবেশ পাবেন।
১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার ডুংরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করা আব্দুল মান্নান ১৯৭৪ সালে তদানীন্তন সিএসপি ক্যাডারে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুগ্মসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক এবং এনজিও ব্যুরোতে মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।
জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ইকোনমিক মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ২০০৩ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন।
আব্দুল মান্নান ২০০৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এবং ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর টানা চারবার সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল মান্নান। ২০১৪ সালে অর্থমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এর কিছুদিন পর তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন তিনি।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)