বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১


ভ্যাট ও কর আরোপের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে: সাইফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:৪৫

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

“অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাঝেমধ্যে খেই হারিয়ে ফেলছে। সরকার জনগণের আস্থার মর্যাদা রাখতে পারছে না। সরকারকে জনগণ পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের ভূমিকায় দেখতে চায় না। ভ্যাট ও কর আরোপের নতুন সিদ্ধান্ত বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থী। ভ্যাট ও কর আরোপের আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করুন।”

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, পাঁচ মাস পার হলেও অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দল ও জনগণের নজিরবিহীন বিপুল সমর্থনকে উপযুক্তভাবে কাজে লাগাতে পারছে না। তাদের প্রতি জনগণের আস্থার মর্যাদাও তারা রাখতে পারছেন না। মনে হয় মাঝেমধ্যে তারা খেই হারিয়ে ফেলছেন। কাজের অগ্রাধিকারও তারা ঠিক করতে পারছেন না।

সাইফুল হক বলেন, বাজার পরিস্থিতি এখনও অনেকটা বেসামাল। সরকার কোনভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। জীবন-জীবিকা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভালো নয়। শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈরাজ্য অব্যাহত রয়েছে। স্কুলের পাঠ্যবইয়ে আদিবাসী শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অস্বাভাবিকভাবে শতাধিক পণ্যের উপর ভ্যাট ও কর আরোপের সিদ্ধান্ত বাজারের আগুনে পুড়তে থাকা মানুষের কাছে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ এর মত। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ যখন দিশেহারা; তখন এই পদক্ষেপ কষ্টে থাকা মানুষের দুর্ভোগ আরও চরমে নিয়ে যাবে। এসব পদক্ষেপ একদিকে গরীব ও স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আরও ঝুঁকিতে ফেলে দেবে, আর অন্যদিকে শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পেলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে, বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন।

সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের রাজস্ব আয়ের অনেকগুলো সুযোগ থাকলেও তা কাজে লাগানো হচ্ছে না। কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারকারীদের ধরতে দৃশ্যমান ও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। প্রায় ছয় লক্ষ কোটি টাকা খেলাপী ঋণ আদায়ে বিশেষ কোনো তৎপরতা নেই। দুর্নীতিবাজ দুর্বৃত্ত মাফিয়াদের কাছ থেকে তাদের অবৈধ অর্থবিত্ত উদ্ধারে গত কয়েক মাসে কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। তাছাড়া জ্বালানি খাতসহ নানা ক্ষেত্রে রয়েছে সীমাহীন সিস্টেম লস ও দুর্নীতি। কর ফাঁকি রোধ, খেলাপী ঋণ ও অবৈধ অর্থবিত্ত সামান্যও যদি উদ্ধার করা যায় তাহলে বিদ্যমান রাজস্ব সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এই বাইরে অপ্রয়োজনীয় কিছু মেগা প্রকল্প বন্ধ, বিলাসদ্রব্যের আমদানি সীমিত করাসহ নানাভাবে আর্থিক সংকট উত্তরণের সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ব্যর্থতার দায়ে মানুষ শাস্তি পেতে পারে না। আইএমএফ এর পরামর্শে নেওয়া নিত্য ব্যবহৃত পণ্যের উপর ভ্যাট ও শুল্ককর বৃদ্ধির আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহবান জানাই।

সাইফুল হক বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকারকে আমরা কোনভাবেই পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই না। সরকারের সাম্প্রতিক এইসব পদক্ষেপ বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী। আমরা আশা করব সরকার আমলাতান্ত্রিকভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তসমূহ প্রত্যাহার করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি ভ্যাট ও করের বোঝা প্রত্যাহারসহ জনগণের জীবন-জীবিকার জরুরি সমস্যা সমাধানের দাবিতে আগামী ১৯ জানুয়ারি বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, চট্টগ্রাম জেলার সম্পাদক মৃদুল বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর কমিটির বাবর চৌধুরী, আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ০৫:২৩ ভোর
যোহর ১২:০৮ দুপুর
আছর ০৩:৫৭ বিকেল
মাগরিব ০৫:৩৫ সন্ধ্যা
এশা ০৬:৫২ রাত

বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫