মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা দ্বিতীয় বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। এ সুযোগ হারালে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে চিরজীবনের জন্য দায়ী থাকবো।”
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে “পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫”-এর উদ্বোধন এবং পুলিশ সদস্যদের পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “বিশ্বের বুকে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে এবং আগামীতেও তা ধরে রাখবে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। আপনাদের কাজ, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক- সবকিছু দেখেই দুনিয়া বিচার করে, আমরা সভ্যতার কোন স্তরে আছি। আমরা চাই, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হোক।”
পুলিশ বাহিনীর ঐতিহাসিক ভূমিকার স্মরণ করে তিনি বলেন, “একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৫ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাঙালি পুলিশ সদস্যরাই সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এটাই বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবময় ইতিহাসের সূচনা। আমরা শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং আশা করি, তাদের আদর্শ অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বৈষম্যহীন, ন্যায়ের সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাবে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিগত ১৫ বছরের ‘স্বৈরাচারী শাসনামলে পুলিশ বাহিনী দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। এতে জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় এবং বহু সৎ পুলিশ সদস্যকেও এর খেসারত দিতে হয়েছে। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় পুলিশ বাহিনী ছিল ভঙ্গুর অবস্থায়। তখন থেকে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।”
ড. ইউনূস বলেন, “নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশকে সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে কাজ করতে হবে। নারী ও শিশুরা যেন প্রয়োজনে পুলিশের হটলাইনে ফোন করে সহজে সাহায্য পেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই বোঝা যাবে, দেশ নিরাপত্তা ও মানবিকতায় এগিয়ে যাচ্ছে।”
চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়, তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। পুলিশ সদস্যদের এ সময় অত্যন্ত সতর্ক ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। সব প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পায় এবং ভোটাররা যেন ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোট দিতে পারে- এটাই মূল লক্ষ্য।”
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)