রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি সংগৃহীত
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত আমলের দুর্নীতি অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির ১৫ কর্মকর্তার নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সম্প্রতি দুদকের বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে ওই কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল নাম, পদবি, কর্মরত শাখার নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, এনআইডি, মোবাইল নম্বরসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।
অনুসন্ধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মো. আবুল কাইয়ুম হাওলাদার সই করা চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। রোববার (২৪ আগস্ট) দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যেসব কর্মকর্তাদের নথিপত্র চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন দপ্তরের চার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব, আবুল বাশার, ওমর ফারুক ও মকসুমুল হাকিম রেজা, সহকারী প্রকৌশলী অরিফুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল আলম, আহসান হাবিব ও রেজাউল করিম, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ওহিদ মুরাদ, পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দিপক লাল মৃধা ও রেজাউল, রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার, ট্রেড সুপার মো. শহিদুল, সুপারেন্টেড (পানি সরবরাহ) পান্না এবং মেডিকেল অফিসার খন্দকার মনজুরুল ইসলাম শুভ্র। চিঠিতে ওই কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত নথি জরুরি ভিত্তিতে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের জুলাই মাসে সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন ও প্রধান উচ্ছেদ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসহ ১৯ কর্মকর্তার ঘুষ-দুর্নীতিসহ অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নামে দুদক।
অভিযোগে সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের সময় সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন সময়ে বালু ভরাট সংক্রান্ত কাজ, ২০২২ সালে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার ব্যানার তৈরির কাজ, খোকন সেরনিয়াবাতের ফেসবুক পেজের বুস্টিংয়ের বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার কাজ এবং সাবেক মেয়রের ল্যাপটপ, ড্রোন ক্যামেরা, চেয়ার, টেবিল, মনিটর, আইটি মেশিনসহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলেমিশে বরিশাল সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছিলেন। তাঁদের যৌথ কারসাজিতে অবৈধ নিয়োগ, প্রতিটি দপ্তরে সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, ঘুষ বাণিজ্য, ব্যাপক অর্থ লোপাটসহ সকল ধরনের দুর্নীতি করে সরকার ও জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার, ট্রেড সুপার মো. শহিদুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিটি করপোরেশন থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তবে তারা দুইজনেই তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতা হওয়ার প্রভাব খাটিয়ে আবার চাকরি ফিরে পান বলে জানা গেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত পরিসংখ্যানবিদ স্বপন কুমার দাসের বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উচ্ছেদ শাখার প্রধান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মশক নিধন শাখার প্রধান পদ আগলে রেখে দিনের পর দিন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদক পরিচালক মোজাহার আলী সরদার বলেন, সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানকাজ চলমান রয়েছে। অনুসন্ধানে শেষে কর্মকর্তার দাখিলকৃত প্রতিবেদনের আলোকে কমিশন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ডিএস /সীমা
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)