বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২


ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম

খুনি হাসিনা-কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিচার না হলে দেশের স্বাধীনতা নিরাপদ নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৫৯

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক রক্তাক্ত অধ্যায়। সেদিন থেকেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন হয়। ওই দিন খুনি হাসিনা ও তার দোসররা আমাদের ভাইদের হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছিল, এটাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সূচনা। এই খুনি হাসিনা ও কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিচার না হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিরাপদ নয়।’

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ আয়োজিত ‘২৮ অক্টোবর প্রেক্ষিত : লাশতন্ত্র থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের উত্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী উত্থান বুঝতে হলে ২৮ অক্টোবরের দিকে তাকাতে হবে। সেদিন থেকেই শেখ হাসিনা ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ কায়েম করেন– গুম, খুন, আয়নাঘর, বিচারিক হত্যাকাণ্ড আর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে থাকেন। এমনকি জাতীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকেও দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি রেখে তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চালান।

সাদিক কায়েম বলেন, ‘২৮ অক্টোবর আমাদের শেখায়– রাজনীতিতে শত্রু আর মিত্রকে চিনতে না পারলে আবারও দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের অন্ধকারে ফিরে যেতে হবে। আজও সেই খুনি হাসিনা ও তার দোসর ১৪-দলীয় চক্র দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছে তথাকথিত সাংস্কৃতিক ফ্যাসিস্টরা। আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী, আহমদ শফী, আলেম সমাজের ওপর হত্যাযজ্ঞের বৈধতা দিয়েছে এই চক্র। পার্বত্য চট্টগ্রামের অখণ্ডতা নষ্টের চেষ্টাও করেছে তারা।

ডাকসু ভিপি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে আজাদি পেয়েছে। কিন্তু এই সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার ষড়যন্ত্রে নেমেছে আমাদের ঐক্য ভাঙতে, বিভাজন সৃষ্টি করতে। তাই এখন সময় এসেছে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।

তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে রায়-পরবর্তী গণহত্যা, বিচারিক হত্যাকাণ্ড এবং বেগম জিয়া ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের জন্য খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই সকল চক্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।’

সাদিক কায়েম আরও বলেন, হাসিনা ও তার নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ- সবই সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তারা ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশকে উপনিবেশ বানাতে চেয়েছে, অর্থনীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে।

তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। শহীদদের রক্তের প্রতিশোধ নিতে হবে। আমরা চাই সাহসী বিচার, আন্তর্জাতিক মানের বিচার- ছাত্রজনতা প্রস্তুত।

ডাকসু ভিপি তার বক্তৃতার শেষাংশে বলেন, ‘রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের প্রশ্নে ও খুনি হাসিনার বিচারের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি জামায়াত, শিবির, বিএনপি বা অন্য কেউ এই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়, আমরা তাদের বিরুদ্ধেও কথা বলব।’

তিনি আহ্বান জানান, ‘এখন আমাদের হাতে ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। ৫৪ বছর পর আমরা এই দেশকে নতুনভাবে গড়ার পথে আছি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে।’

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)
আরো পড়ুন

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

নামাজের সময়সূচি

ওয়াক্ত সময়সূচি
ফজর ৪:৩৩ ভোর
যোহর ১১:৫১ দুপুর
আছর ৪: ১২ বিকেল
মাগরিব ৫: ৫৫ সন্ধ্যা
এশা ০৭: ০৮ রাত

বুধবার ২৯ অক্টোবর ২০২৫