শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিট কয়েনসহ অন্যান্য ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার রোধে উচ্চতর প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।
তিনি বলেন, ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার ঠেকাতে দেশ ও বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডিজিটাল অ্যাসেটস সংক্রান্ত মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আরও দক্ষ করে গড়ে তুলা হবে।
সোমবার (২০ মে) সিআইডি সদর দপ্তরে ডিজিটাল সম্পদ সুরক্ষা : ম্যালওয়্যার বিশ্লেষণ, হ্যাকিং কৌশল এবং ক্রিপ্টো প্রতিরোধ শীর্ষক এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিআইডি প্রধান এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনের ফলে মানুষ প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আমাদের দৈনন্দিন সব কাজই কোনো না কোনোভাবে তথ্য প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। এখন মানুষ খুব সহজে সেকেন্ডের মধ্যে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারছে। মুহূর্তের মধ্যে তার ডিজিটাল ডিভাইসে রাখা ব্যক্তিগত তথ্য, ফাইল, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য ব্যবহার করতে পারছে। এতে করে মানুষ যেমন সুবিধা ভোগ করছে, তেমনি কিছু ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সাইবার হ্যাকার ও অপরাধীরা ঝুঁকিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ যেমন- সাইবার প্রতারণা, অর্থ লোপাট, সাইবার অ্যাটাক, পর্নোগ্রাফি, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার, ডেটা ব্রিচ, সাইবার বুলিংসহ নানা ধরনের অপরাধ করে যাচ্ছে।
এ সকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে সিআইডি, বাংলাদেশ পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত পূর্বক আইনের আওতায় আনাসহ তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
কর্মশালায় মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শিবলী কায়সার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)।
কর্মশালা শেষে সাইবার নিরাপত্তায় সিআইডির পরামর্শ
সফটওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট রাখা, অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা, সোশ্যাল মিডিয়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ সব জায়গায় শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, অনলাইন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার সেনসিটিভ তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকা, স্প্যাম ইমেইলের অ্যাটাচমেন্ট না খোলা, স্প্যাম মেইলের কোনো লিঙ্ক এবং অবিশ্বস্ত কোনো ওয়েবসাইটের লিঙ্কে ক্লিক না করা, সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে না হলে কখনোই কোথাও বা কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য না দেওয়া, ওয়েবসাইটের ইউআরএল নিয়ে সতর্ক থাকা, ব্যাংক স্টেটমেন্টে নজর রাখা, নিকট আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে জানানো এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় শেয়ার করার পরামর্শ সিআইডির।
এছাড়াও পাবলিক নেটওয়ার্ক (ফ্রি ওয়াইফাই) ব্যবহার থেকে বিরত থাকা, নিজের ব্যতীত অন্যের ডিভাইসে কোনো অ্যাকাউন্ট যেমন ফেসবুক, ইমো, ইন্সটাগ্রাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লগইন করলে ব্যবহার শেষে অবশ্যই লগআউট করা, এসএমএসের মাধ্যমে যদি পরিচিত কারো বিপদের কথা বলে টাকা চায় তাহলে টাকা দেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করা, ডিভাইসে অজানা কেউ লগইন আছে কিনা তা যাচাই, থার্ড পার্টি অ্যাপস ব্যবহারে সতর্ক থাকা, পরিবর্তিত আইইএমআই মোবাইল সেট ব্যবহার করা হতে বিরত থাকা, টু-ফ্যাক্টর অথেনটিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার, অপরিচিত কাউকে পিন কোড, পাসওয়ার্ড শেয়ার না করার ব্যাপারে সিআইডি পরামর্শ দিয়েছে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)