সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দেশে বন্ধ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। তবে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে সক্রিয় রয়েছেন বেশিরভাগ ব্যবহারকারী৷ সেই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেই রাষ্ট্রীয় শোককে প্রত্যাখান করতে দেখা গেছে হাজার হাজার নেটিজেনকে। আবার সরকার পক্ষের অনুসারীরা প্রকাশ করছেন শোকের আবহ। ফলে লাল ও কালো রঙে সয়লাব হয়ে গেছে ফেসবুকের টাইমলাইন।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দেশব্যাপী শোক পালন হচ্ছে। সে অনুযায়ী সকাল থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরসহ ক্ষমতাসীন দল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কালো ব্যাজ ধারণ করছেন।
সকাল থেকে সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কালো ব্যাজ ধারণ করতে দেখা গেছে। এছাড়া মসজিদে বিশেষ দোয়া এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা হচ্ছে। সরকার সমর্থিতরা নিজেদের ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারের জায়গায় কালো রঙ ধারণ করেছেন। কেউবা কালো পোশাকে ছবি দিচ্ছেন।
নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজের প্রোফাইল পিকচারের জায়গায় কালো রঙ ধারণ করা হয়েছে।
প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তনের ওই পোস্টে আওয়ামী লীগ লিখেছে, ‘কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় নিহত সকল শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা। সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’
এদিকে সরকারের এই শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা ভিন্ন ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রিফাত রশিদ। বার্তা প্রেরক হিসেবে উল্লেখ ছিল আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয় মো. মাহিনের নাম।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতনের বিচার না করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিন যে নির্মম উপহাস করা হচ্ছে। তার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় শোককে প্রত্যাখান করে আগামীকাল লাল কাপড় মুখে ও চোখে বেঁধে ছবি তোলা এবং অনলাইনে ব্যাপক প্রচার কর্মসূচি করার জন্য অনুরোধ করছি।
তাদের এই অনুরোধে সাড়া দিতে দেখা গেছে লাখো ফেসবুক ব্যবহারকারীকে। অনেকেই লাল কাপড় মুখে ও চোখে বেঁধে ছবি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। কেউ পোস্ট করেছেন কার্টুনের মুখে ও চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছবি।
আবার আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়ে শুধু লাল রঙের প্রোফাইল পিকচার দিতেও দেখা গেছে হাজার হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারীকে। কেউ কেউ সমর্থন দিয়েছেন লাল রঙের পোশাক পরিহিত ছবি প্রকাশ করে।
আওয়ামী লীগ তাদের পেইজে কালো রঙ ধারণ করলেও তার বিপরীতে অবস্থান বিএনপির৷ রাজনৈতিক দলটির ফেসবুক পেইজগুলোর প্রোফাইল পিকচারে ধারণ করা হয়েছে লাল রঙ।
রাষ্ট্রীয় শোক দিবসের দিকে বিএনপির এমন কর্মকাণ্ডকে 'তামাশা' বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে বিএনপিকে রাজনৈতিক দল হিসেবেও মানতে আপত্তি ক্ষমতাসীনদের।
দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, 'বিএনপি সব সময় মানুষের মৃত্যু নিয়ে তামাশা করে৷ বিএনপির রাজনীতি লাশের উপর দাঁড়িয়ে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় থাকা। তাই তারা সব লাল করছে৷'
কামাল বলেন, 'বিএনপি কি রাজনৈতিক দল! কানাডার আদালত বলছে, বিএনপি একটা সন্ত্রাসী সংগঠন। জামায়াত-শিবির হচ্ছে জঙ্গিদের সংগঠন, সন্ত্রাসীদের সংগঠন, যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন। তাদের কাছে আর কী আশা করা যায়?'
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)