শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দাজ্জালের আবির্ভাব কেয়ামতের বড় আলামত। দাজ্জাল এসেই মানুষকে বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করবে। নবীজির ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, তার ভয়াবহ ও ঈমানবিধ্বংসী ফিতনা থেকে বেঁচে থাকা খুব কঠিন হবে। কিন্তু বিশেষ কিছু আমলের মাধ্যমে সেই কঠিন সময়েও ঈমান রক্ষা করা সম্ভব হবে। সেরকমই একটি স্বীকৃত আমল হচ্ছে সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করা।
নবীজি (স.) বলেছেন- من حفظ عشر آيات من أول سورة الكهف، عصم من فتنة الدجال ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা পাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৮০৯)
সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত পাঠকের সুবিধার্থে এখানে অর্থসহ তুলে ধরা হলো। আপনারা মুখস্থ করে নিতে পারেন।
১. اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ عَلٰی عَبۡدِهِ الۡکِتٰبَ وَ لَمۡ یَجۡعَلۡ لَّهٗ عِوَجًا
‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তাঁর বান্দার ওপর কিতাব নাজিল করেছেন এবং তাতে রাখেননি কোন বক্রতা।’
২. قَیِّمًا لِّیُنۡذِرَ بَاۡسًا شَدِیۡدًا مِّنۡ لَّدُنۡهُ وَ یُبَشِّرَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمۡ اَجۡرًا حَسَنًا
‘সরলরূপে, যাতে সে তাঁর পক্ষ থেকে কঠিন আজাব সম্পর্কে সতর্ক করে এবং সুসংবাদ দেয়, সেসব মুমিনকে, যারা সৎকর্ম করে, নিশ্চয় তাদের জন্য রয়েছে উত্তম প্রতিদান।’
৩. مَّاکِثِیۡنَ فِیۡهِ اَبَدًا ‘তারা তাতে অনন্তকাল অবস্থান করবে।’
৪. وَّ یُنۡذِرَ الَّذِیۡنَ قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰهُ وَلَدًا ‘আর যেন সতর্ক করে তাদেরকে, যারা বলে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।’
আরও পড়ুন: কেয়ামতের যেসব আলামত সৌদি আরবে প্রকাশ পাবে
৫. مَا لَهُمۡ بِهٖ مِنۡ عِلۡمٍ وَّ لَا لِاٰبَآئِهِمۡ کَبُرَتۡ کَلِمَۃً تَخۡرُجُ مِنۡ اَفۡوَاهِهِمۡ اِنۡ یَّقُوۡلُوۡنَ اِلَّا کَذِبًا
‘এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও না। বড় মারাত্মক কথা, যা তাদের মুখ থেকে বের হয়। মিথ্যা ছাড়া তারা কিছুই বলে না!’
৬. فَلَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ عَلٰۤی اٰثَارِهِمۡ اِنۡ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِهٰذَا الۡحَدِیۡثِ اَسَفًا
‘হয়ত তুমি তাদের পেছনে পেছনে ঘুরে দুঃখে নিজেকে শেষ করে দেবে, যদি তারা এই কথার প্রতি ঈমান না আনে।’
৭. اِنَّا جَعَلۡنَا مَا عَلَی الۡاَرۡضِ زِیۡنَۃً لَّهَا لِنَبۡلُوَهُمۡ اَیُّهُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا
‘নিশ্চয় পৃথিবীতে যা রয়েছে, তা আমি শোভা বানিয়েছি তার জন্য, যাতে তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি যে, কর্মে তাদের মধ্যে কে উত্তম।’
৮. وَ اِنَّا لَجٰعِلُوۡنَ مَا عَلَیۡهَا صَعِیۡدًا جُرُزًا
‘আর নিশ্চয় তার ওপর যা রয়েছে তাকে আমি উদ্ভিদহীন শুষ্ক মাটিতে পরিণত করব।’
৯. اَمۡ حَسِبۡتَ اَنَّ اَصۡحٰبَ الۡکَهۡفِ وَ الرَّقِیۡمِ ۙ کَانُوۡا مِنۡ اٰیٰتِنَا عَجَبًا
‘তুমি কি মনে করেছ যে, গুহা ও রাকিমের (রাকিম একটি পাহাড়ের নাম অথবা আসহাবে কাহাফের যুবকরা যে গ্রামের বাসিন্দা ছিল ওই গ্রামের নাম) অধিবাসীরা ছিল আমার আয়াতসমূহের মধ্যে বিস্ময়কর?’
১০. اِذۡ اَوَی الۡفِتۡیَۃُ اِلَی الۡکَهۡفِ فَقَالُوۡا رَبَّنَاۤ اٰتِنَا مِنۡ لَّدُنۡکَ رَحۡمَۃً وَّ هَیِّیٴۡ لَنَا مِنۡ اَمۡرِنَا رَشَدًا
‘যখন যুবকরা গুহায় আশ্রয় নিল এবং বলল, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার পক্ষ থেকে রহমত দিন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে চলার ব্যবস্থা করুন।’
সুরা কাহাফের এই ১০ আয়াত যদি আমরা মুখস্থ করে নিই, তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদের দাজ্জালের ভয়াবহ ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।)